হিজাব না মানলেই মেয়েদের ৫-১০ বছরের জেলের পথে ইরান

তেহরান, ৪ আগস্ট– এ বার হিজাব-আইনকে আরও কঠিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান সরকার। বিল পাশ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে, নতুন আইনে মেয়েরা পোশাক-বিধি না মানলে ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত জেল। সেই সঙ্গে ভারতীয় মুদ্রায় ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।ইসলামিক দণ্ডবিধির ৩৬৮ ধারাকে হিজাব আইন বলা হয়। আগেও হিজাব না পরলে এই আইনে শাস্তি হত। তবে ১০ দিন থেকে দু’মাস পর্যন্ত জেল, ভারতীয় মুদ্রায় ৯৭ থেকে ৯৭৭ টাকা জরিমানা। এখন সেটাই সর্বোচ্চ ৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কারাদণ্ডের মেয়াদ বেড়ে ৫ থেকে ১০ বছর। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দু’সপ্তাহ হল কুখ্যাত ‘নীতি-পুলিশের’ টহলদারি বেড়েছে দেশজুড়ে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ইরানে মেয়েদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। জনসমক্ষে যাঁরা যথাযথ ভাবে মাথা ঢাকবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন না মানলে গ্রেফতার করা হবে এবং ‘পুনর্শিক্ষা’ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ এই নামেই বলে। অর্থাৎ কি না, কথা না মানলে ‘উচিত শিক্ষা’।

এক বছর আগের কথা। হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল ইরান। যথাযথ ভাবে হিজাব না-পরার অভিযোগে মাহসা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নীতি পুলিশ। এর পর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশের বিরুদ্ধে মাহসার উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনাকে সূত্র করেই হিজাব-বিরোধী আন্দোলন শুরু হয় ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে।

শুধু হিজাব পরাই নয়, ‘সতীত্ব’ বজায় রাখতে হবে মেয়েদের। চারিত্রিক শুদ্ধতা বজায় না রাখলেই শাস্তি। তবে মাথা যথাযথ ভাবে ঢাকা না হলে তা সর্বোচ্চ অপরাধ গণ্য করা হবে। কোনও সেলেব্রিটি যদি আইন ভাঙেন, তা হলে তাঁর শাস্তি আরও কঠিন। ওই ব্যক্তির সম্পদের দশ ভাগের এক ভাগ জরিমানা হিসেবে দিতে হবে সরকারকে। একটি নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য তিনি কাজকর্ম করতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক সফর করতে পারবেন না। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনও ব্যবসায়ী যদি তাঁর দফতরের মহিলা কর্মীদের হিজাব পরায় ছাড় দেন, তা হলে ব্যবসার তিন মাসের লভ্যাংশ জরিমানা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়, প্রশাসনিক দফতর, পার্ক, পর্যটন কেন্দ্র, হাসপাতালগুলিতে নারী-পুরুষ ভাগ আরও স্পষ্ট করা হবে।