দিল্লি, ১৭ মার্চ– অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে স্বস্থির খবর শোনালেও নতুন ভয়ের বাণী শোনাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দফতর জানিয়েছে, অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ কমলেও, আগামী কয়েক সপ্তাহ জুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ ভাইরাসের ‘এইচ ১ এন ১’ এবং ‘এইচ ৩ এন ২’ প্রজাতির সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। গত দু’মাসের ওই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এবং বর্তমান সময়ে মৃত্যুহার পর্যালোচনা করেই এমন দাবি করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সূত্রের খবর, ইনফ্লুয়েঞ্জা এইচ ৩ এন ২ প্রজাতির সংক্রমণে দেশে দ্বিতীয় মৃত্যু হয়েছে। পুণের ৭৩ বছরের এক ব্যক্তি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণে অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণে দেশে প্রথম মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকের হাসান জেলায়। ৮২ বছরের এক প্রবীণের মৃত্যু হয়েছিল নিউমোনিয়ায় ভুগে। মহারাষ্ট্র, পুণে, কর্নাটক, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে ইনফ্লুয়েঞ্জার দুই ছোঁয়াচে প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ২ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ অবধি মহারাষ্ট্রে এইচ৩এন২ ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১৯ জনে, প্রজাতির সংক্রমণে আক্রান্ত অন্তত ৩২৪ জন। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও সংক্রমিত হচ্ছে। তবে এখনও অবধি ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভুগে শিশুমৃত্যুর খবর সামনে আসেনি।
তবে মধ্য়প্রদেশেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্যের পরিস্থিতি বিচার করে সতর্কতা জারি করেছে সরকার। সকলকে মাস্ক পরে বাইরে বেরত বলা হয়েছে। পারস্পরিক দূরত্ব মানতে বলা হচ্ছে। উপসর্গ দেখলেই টেস্ট করিয়ে নিতে বলছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের অনেকগুলো ধরন আছে—টাইপ এ, টাইপ বি, এইচ১এন১ (নন-সোয়াইন ফ্লু)। ইনফ্লুয়েঞ্জার দুই উপপ্রজাতি এইচ৩এন২ ও এইচ১এইচ সবচেয়ে বেশি ছোঁয়াচে। পাখি ও অন্য স্তন্যপায়ী প্রাণিদের শরীরেও ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। বহুবার জিনের বদল ঘটাতে পারে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এর আগে এই উপপ্রজাতি তার জিনের বিন্যাসের বদল ঘটিয়েছিল। তাই এত ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে।
এই ভাইরাল স্ট্রেন একবার শরীরে ঢুকলে তাড়াতাড়ি সংখ্যায় বাড়তে পারে এবং আক্রান্তের থেকে দ্রুত ছড়াতেও পারে। সর্দি-কাশি, মুখ থেকে বেরনো থুতু-লালায় থাকা ভাইরাস ড্রপলেটের মাধ্যমে সুস্থ ব্যক্তিকে সহজেই সংক্রমিত করতে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জার এইচ৩এন২ উপপ্রজাতির সংক্রমণে এখনও অবধি মৃত্যুর খবর না এলেও,জানা যাচ্ছে রোগীরা ফুসফুসের জটিল অসুখ ও প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে সাধারণত কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, শীত শীত ভাব, সর্দি-কাশি, নাক দিয়ে জল পড়া, মাথা যন্ত্রণা, পেট খারাপ, বমি বমি ভাব, গায়ে, হাত-পায়ে ব্যথা, গলায় ব্যথা, শুকনো কাশি দিন পনেরো ধরে থাকতে পারে, রোগের বাড়াবাড়ি হলে নিউমোনিয়ার পর্যায়ে চলে যেতে পারে দেখলেই বুঝে নিয়ে হবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত, এবং সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।