• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

মণিপুর ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ ‘ইন্ডিয়া’ 

 দিল্লি, ২ অগাস্ট – মণিপুর ইস্যুতে কেন্দ্রকে একঘরে করতে এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করলেন এককাট্টা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মণিপুর নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিতে এবং ওই রাজ্য পরিদর্শনে যেতে বলুন রাষ্ট্রপতি , দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে এমনই আর্জি জানালেন ৩১ জনের প্রতিনিধিদল। চলতি বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই মণিপুরের

 দিল্লি, ২ অগাস্ট – মণিপুর ইস্যুতে কেন্দ্রকে একঘরে করতে এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করলেন এককাট্টা বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মণিপুর নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিতে এবং ওই রাজ্য পরিদর্শনে যেতে বলুন রাষ্ট্রপতি , দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে এমনই আর্জি জানালেন ৩১ জনের প্রতিনিধিদল। চলতি বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই মণিপুরের অশান্তি ও হিংসা নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল হচ্ছে সংসদের দুই কক্ষ। এবার সরাসরি রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। এঁদের  মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেই ২১ জন সাংসদও, যাঁরা সম্প্রতি মণিপুরে যান পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে। মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির হাতে একটি স্মারকলিপিও তুলে দেন বিরোধীরা।

মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে আরও সোচ্চার হল বিরোধী জোট। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার বিরোধী জোটের তরফে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে সময় চান। সেই আবেদন মেনেই রাষ্ট্রপতি বুধবারের সময় দেন ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধিদের। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতিকে মণিপুরের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছি। সে রাজ্যে মেয়েদের উপর  যেভাবে অত্যাচার চলছে জানিয়েছি। তবে আমাদের মূল দাবি হল, সে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই মণিপুরে যান। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন রাষ্ট্রপতি।” বুধবারের এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন, এনসি-র ফারুক আবদুল্লার মতো নেতৃবৃন্দ। 

রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে বিরোধী জোটের ৩১ জন নেতা হরিয়ানার নুহতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিষয় উত্থাপন করেন।  তাঁরা অভিযোগ জানান যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে এমন ঘটনা ঘটছে, অথচ এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্বিকার। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন , গত ২৯ ও ৩০ জুলাই মণিপুর সফর করেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বেশ কয়েকজন সাংসদ।  রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যে প্রতিনিধি দল দেখা করতে যায় সেই  প্রতিনিধি দলে তাঁরাও ছিলেন।  তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে বিশদে মণিপুরের পরিস্থিতি জানান। স্মারকলিপিতে বিরোধীদের দাবি, ‘আমরা আপনাকে মণিপুরে যে পরিস্থিতি বিদ্যমান, সেই বিষয়ে সংসদে জরুরি ভাষণ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপ দিতে অনুরোধ করছি। তারপর এই বিষয়ে একটি বিশদ ও বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন।     

পাশাপাশি, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব মণিপুর থেকে দু’জন মহিলাকে রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতিকে জানান, মণিপুরে নারীদের উপর যে ধরনের অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, তাতে দুই সম্প্রদায়ের দুই মহিলাকে রাজ্যসভায় আনা উচিত।

এদিকে বুধবার সকালে সংসদে বিরোধী পক্ষের পরবর্তী কৌশল স্থির করতে খাড়্গের দফতরে বৈঠকে বসেন বিরোধী সাংসদেরা। অন্য দিকে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে শীর্ষস্তরের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। মণিপুর নিয়ে বিরোধী দলগুলির আক্রমণ এবং সমালোচনার পাশাপাশি সোমবার থেকে সে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও ধারাবাহিক সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্র। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মঙ্গলবারই দেশের প্রধান বিচারপতি মণিপুর হিংসা নিয়ে তদন্তের গতিকে ‘অলস’ আখ্যা দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর গতিতে চলছে তদন্ত। তিনি সলিসিটার জেনারেলকে প্রশ্ন করেন যে, ৬৫০০ টি এফআইআর-এর মধ্যে কতগুলি শারীরিক ক্ষতি, সম্পত্তি ধ্বংস, ধর্মীয় স্খান ও বাড়িঘর ভাঙচুর, খুন , ধর্ষণের মতো গুরতর অপরাধ জড়িত রয়েছে? মামলাগুলির তদন্ত দ্রুত গতিতে করার নির্দেশ দেন তিনি। 

প্রসঙ্গত, বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধী দলগুলি মণিপুর ইস্যু নিয়ে আলোচনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। গত ২৬ জুলাই কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ ও বিআরএস সাংসদ নাগেশ্বর রাও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন।  মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানান, আগামী ৮ অগস্ট এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে। আগামী ১০ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি ভাষণ দেবেন।