করোনাকালে ধর্ম-ঘৃণা ছড়ানোয় সবার ওপরে ভারত, বলছে মার্কিন সংস্থার সমীক্ষা
SNS
দিল্লি, ২ ডিসেম্বর– করোনা মহামারী চলাকালে মানুষের মনে ভালো থেকে মন্দ প্রভাব বেশি ফেলেছিল। কিন্তু তাতে নাকি ধর্ম বিদ্বেষ ছড়ানোই প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। মন্দের তালিকায় শীর্ষে ছিল ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক পোস্টগুলি ।
আমেরিকার ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালে ধর্মকে জড়িয়ে সামাজিক শত্রুতায় ভারত ছিল শীর্ষে। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলি থেকে ‘করোনা জিহাদ’ জাতীয় হ্যাশ্যাগ দিয়ে লাগাতার ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়ানো হয়। মূলত আক্রমণ করা হয় ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের।
পিউ রিসার্চের সমীক্ষায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘৃণা, বিদ্বেষের মহামারীর চিত্রটিকে সামাজিক প্রতিকূলতার সূচকের অন্তর্ভুক্ত করে সমীক্ষাটি চালানো হয়। তাতে ১৯৮টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান এক নম্বরে। উপরের দিকে থাকা বাকি দেশগুলি হল সোমালিয়া, পাকিস্তান, মিশর, লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাক, ইজরায়েল ও আফগানিস্তান। গতকাল রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে পিউ রিসার্চ সেন্টার।
করোনা মহামারী শুরুর মুখে সামাজিক মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোতে নিশানা করা হয় দিল্লিতে মুসলিমদের একট ধর্মীয় জমায়েতকে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়, ওই জমায়েত থেকে অনেকের করোনা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিকও ছিলেন।
ওই জমায়েতের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক পোস্টে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারীর রূপ নেওয়ায় সরাসরি মুসলিমদের দায়ী করা হয় তখন। ভারতের মতো আরও অনেক দেশই মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারের শিকার হয়। বাড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। মুসলিমদের উপর হামলার অভিযোগও ওঠে বেশ কিছু।
ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের উদ্ধৃতি দিয়ে পিউ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে পাকিস্তানে, ইরানে তীর্থ করে ফিরে আসা হাজারা জাতিগোষ্ঠীর শিয়াদের করোনা সংক্রমণের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। চরমপন্থীরা শিয়া হাজারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালায়। পাকিস্তানের কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী কোভিড-১৯ কে ‘শিয়া ভাইরাস’ বলেও আখ্যা দেয় তখন।
রিপোর্টে আফগানিস্তানে শিখদের উপর নির্যাতনের বিশদ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ধারাবাহিক আক্রমণে সে দেশে ২৫জন শিখ ধর্মাবলম্বী নিহত হন। আফগানিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হন শিখ ধর্মাবলম্বী প্রায় দুশো নাগরিক।