• facebook
  • twitter
Wednesday, 30 October, 2024

নতুন ভোরের খোঁজে ফের করমণ্ডলে সওয়ারি যাত্রীদল   

শালিমার , ৭ জুন – দুর্ঘটনা পর কেটে গেছে পাঁচটি দিন। ভয়াবহতার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ফের চেনা ছন্দে ফিরছে মানুষের জীবন যাত্রা। আশঙ্কা আর ভয়কে সঙ্গী করেই ফের রুটিরুজির সন্ধানে করমণ্ডল ধরতে স্টেশনে পৌঁছেছেন যাত্রীরা। শালিমার স্টেশন থেকে  ট্রেন ছাড়ার সঠিক সময় ছিল বুধবার দুপুর ৩টে বেজে ২০ মিনিটে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছাড়ল ৬ মিনিট দেরিতে। চেন্নাই পৌঁছতে

শালিমার , ৭ জুন – দুর্ঘটনা পর কেটে গেছে পাঁচটি দিন। ভয়াবহতার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ফের চেনা ছন্দে ফিরছে মানুষের জীবন যাত্রা। আশঙ্কা আর ভয়কে সঙ্গী করেই ফের রুটিরুজির সন্ধানে করমণ্ডল ধরতে স্টেশনে পৌঁছেছেন যাত্রীরা। শালিমার স্টেশন থেকে  ট্রেন ছাড়ার সঠিক সময় ছিল বুধবার দুপুর ৩টে বেজে ২০ মিনিটে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছাড়ল ৬ মিনিট দেরিতে। চেন্নাই পৌঁছতে পেরিয়ে যেতে হবে বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের সেই অভিশপ্ত সন্ধ্যার দুর্ঘটনাস্থল। ট্রেনের সওয়ারীরা কেউ চেন্নাই যাচ্ছেন কাজের সন্ধানে, কেউ যাচ্ছেন চিকিৎসা করাতে, কেউবা উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে।    

এদিকে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর পথচলার শুরুতেই বিভ্রাটের মুখে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সাঁতরাগাছি স্টেশনে বিকল হয়ে যায় বাতানুকূল কামরার এসি। ট্রেন ছাড়ার পর প্রথমে বন্ধই ছিল এসি। কিছুক্ষণ পর চালু হলেও সাঁতরাগাছি পৌঁছতেই তা বন্ধ হয়ে যায়। ওই স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনটি।  প্রথমে বি -১ এবং বি-২ কোচ, পরে বি-৩ কোচে ফের এসি চালু হয়।
গত শুক্রবার শেষবার শালিমার থেকে ছুটেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সন্ধ্যাতেই বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এই ট্রেন। যে দুর্ঘটনায় বুধবার পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা এসে ঠেকেছে ২৮৮-তে। এদিন যাত্রীদের চোখে মুখে ছিল এক অজানা আতঙ্কের চাপ। শুক্রবারের ঘটনার আলোচনাই সবার মুখে মুখে ফিরেছে। যাত্রীদেরই একজন জানালেন, ‘‘কিছু তো করার নেই, কাজের জন্য যেতে হবেই। এখন ভগবানই ভরসা।’’ শুক্রবারের দুর্ঘটনার পর দেখা যায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল অভিশপ্ত করমণ্ডলের অসংরক্ষিত কামরাগুলি। এই কামরায় থাকা যাত্রীদেরই সবথেকে বেশি প্রাণহানি ঘটে। এদিন ফের শালিমারে একই ছবি। করমণ্ডল ধরতে অসংরক্ষিত কামরায় ভিড় পরিযায়ী শ্রমিকদের। যাঁরা কাজের তাগিদে ছুটে যাচ্ছেন অন্য রাজ্যে। এমনই এক সওয়ারি জানালেন, পেটের দায়ে ছুটতে হচ্ছে ওখানে।” দুর্ঘটনায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এস-১ কামরা। এদিন শালিমার থেকে ছাড়তে চলা এস-১ কামরার এক যাত্রী বললেন, “কেরলে যাচ্ছি কাজের খোঁজে। ট্রেনে চেপে ভয় লাগছে, বাড়ির লোকেরাও চিন্তায় আছে। তারপরেও যেতে হচ্ছে।”

রেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালেই হাওড়ার শালিমার স্টেশনে পৌঁছেছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। শুক্রবার রেল দুর্ঘটনার পরেই শুরু হয়ে যায় উদ্ধারকাজ। শনিবার থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজের পাশাপাশি শুরু হয় মেরামতির কাজ। কারণ, ওই গুরুত্বপূর্ণ রুটে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে একটি মালগাড়ি চালানো হয় ওই লাইনে। রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট রেলপথে ছুটে গিয়েছে একাধিক ট্রেন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি।  কিন্তু মানুষের মনের দোলাচল কাটেনি এখনো। ভাগ্যের হাতে সব সমর্পণ করে বাঁচার তাগিদেই ফের নতুন ভোরের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন মানুষ।