মারাঠা রাজনীতির মঞ্চে নাটকীয় মোড়,  বিজেপি-শিবসেনা জোটে যোগ দিলেন অজিত পাওয়ার 

মুম্বই, ২ জুলাই –    রাজনীতির মঞ্চে ফের নাটকীয় মোড়।  রাতারাতি এনসিপি ভেঙে বিজেপি সমর্থিত একনাথ শিন্ডে সরকারের সঙ্গে হাত মেলালেন অজিত পাওয়ার। রবিবার দুপুরে মহারাষ্ট্রের রাজভবনে উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তিনি।  মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন ছগন ভুজবল, দিলীপ ওয়ালসে পাতিল, অদিতি ঠাকরে, ধনঞ্জয় মুন্ডের মতো এনসিপি নেতারা।   মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এবং উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের উপস্থিতিতে এই শপথগ্রহণ হয়। ৯ জন বিধায়ককে নিয়ে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-বিজেপি জোট সরকারে যোগ দেন শরদ পাওয়ারের  ভাইপো । 

তবে এই নাটকীয় মোড়েও যে তিনি বিস্মিত নন, তা স্পষ্ট করে দেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার। তিনি জানিয়েছেন, রবিবার মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা জোটে অজিত যোগ দেওয়ায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি  হয়েছে, তা তাঁর কাছে নতুন নয়। আশির দশকেও এই একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন তিনি । কিন্তু মানুষের ভালোবাসা সেই সংকট কাটিয়ে দেয় বলে জানান শরদ পাওয়ার। সেইসঙ্গে তিনি জানান, বিপদের সময় পাশে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে। তাঁরা দু’জনেই ফোন করে পাশে থাকার আশ্বাস জানিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শরদ।


একনাথ শিন্ডে মন্ত্রিসভায় উপমুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন অজিত। সে ক্ষেত্রে দেবেন্দ্র ফডণবীসের পাশাপাশি দ্বিতীয় উপমুখ্যমন্ত্রী পেতে চলেছে মহারাষ্ট্র। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেতে চলেছেন অন্য এনসিপি বিধায়করাও। সূত্রের খবর, রবিবার সকালেই এনসিপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অজিত পাওয়ার । ওই বৈঠকেই পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেন অজিত। অবশ্য এই বৈঠক সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতি পওয়ার।  তারপরই রাতারাতি তিনি রাজভবনে পৌঁছে যান। বিজেপি সমর্থিত একনাথ শিন্ডে সরকারের উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হন ।

অজিতের সঙ্গে এনসিপি শীর্ষ নেতৃত্বের দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছিল।  দলে তাঁর ভূমিকায় যে তিনি খুশি নন, তা-ও পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অজিত। সম্প্রতি তিনি  মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে এনসিপির সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তখন মনে করা হয়, তাঁকে দলের মহারাষ্ট্র শাখার সভাপতি করা হতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি দিল্লিতে এনসিপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পোস্টার থেকে বাদ যায় অজিতের নাম এবং ছবি।


গত ১০ জুন নিজের ২৫তম জন্মদিবসে পাওয়ার ঘোষণা করেন, তাঁর পরে দলের ভার কাদের হাতে যাবে। সেখানে দেখা যায়, ভাইপো অজিতের নাম ছিল না। কার্যকরী সভাপতির পদ পান সুপ্রিয়া সুলে এবং প্রফুল্ল পটেল। জানা যায়, পাওয়ার আপাতত এনসিপি সভাপতি পদেই থাকবেন। তাঁকে সভাপতিত্বে সহায়তা করবেন সুপ্রিয়া এবং প্রফুল।

রবিবার  বিজেপি জোটে যোগ দিয়ে মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন অজিত। তিনি দাবি করেছেন, এনসিপির যে ৫৪ জন বিধায়ক আছেন, তাঁদের মধ্যে ৪০ জনই তাঁর সঙ্গে আছেন। যদিও অজিতের দাবিকে আমল দেননি শরদ পাওয়ার ।