২০১৪-তে পুরোনো মোবাইলের মতো সরকারও বদলে দিয়েছিল মানুষ , কংগ্রেসকে কটাক্ষ মোদির 

মুম্বাই, ২৭ অক্টোবর –   টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব এনেছে ‘ফাইভ জি’ পরিষেবা। ভারত এবার গোটা বিশ্বকে পথ দেখাবে  সিক্স জি পরিষেবাতে। দিল্লিতে আয়োজিত ভারতীয় মোবাইল কংগ্রেসের সপ্তম অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । প্রগতি ময়দানে তিন দিনব্যাপী শুরু হয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি ইভেন্ট আইএমসি ২০২৩ । এই ইভেন্ট চলবে আগামী তিন দিন ধরে।  ফাইভ জি এবং সিক্স জি  সম্পর্কে বেশ কিছু বড় ঘোষণাও  হবে। এছাড়া টেলিকম কোম্পানিগুলো তাদের সাম্প্রতিকতম আপডেট সম্পর্কেও নানান তথ্য প্রকাশ্যে আনবে। তিন দিনের এই অনুষ্ঠানে, এআই, সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভারতের প্রধান টেলিকম সংস্থাগুলি যেমন জিও , এয়ারটেল তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে ইভেন্টে আলোচনা করবে ।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে ভারত মণ্ডপে এশিয়ার বৃহত্তম প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম, ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস ২০২৩-এর উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে, কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স এবং আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং টেলিকম শিল্পের বিশিষ্ট নেতৃত্বরাও  অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিনের অনুষ্ঠানে মঞ্চ থেকে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী।  তাঁর কথায়, ‘২০১৪ শুধুমাত্র কোন তারিখ নয়, বরঞ্চ এই সালটি পরিবর্তনের বছর হিসেবে দেখা উচিত।  কারণ, ওই বছরই ভারতবাসী ফ্রোজেন স্ক্রিনের পুরোনো ফোনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আর তারপর যে সরকারকে মানুষ বেছে নিয়েছে , তা সমগ্র পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।  কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, পুরোনো ফোনগুলির মতো স্ক্রিন নেই, বোতাম টিপলেও কাজ করবে না। আগের সরকার এমনই ফ্রোজেন ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রিস্টার্ট করলে বা ব্যাটারি চার্জ করলিও পুরোনো ফোন কাজ করে না।  ২০১৪-য় মানুষ এইভাবেই পুরোনো ফোন প্রত্যাখ্যান করে আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন দেশ সেবার। ‘

সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “একবিংশ শতাব্দীর দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে, এই ইভেন্ট কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার সম্ভাবনা  নিয়ে এসেছে ৷ একটা সময় ছিল যখন আমরা ভবিষ্যতের কথা বলতাম, যার অর্থ ছিল পরবর্তী দশক বা পরের শতাব্দী। কিন্তু আজ প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণে আমরা বলি যে ভবিষ্যত এখানে এবং এখন।”ফাইভ জি লঞ্চ করার পর মাত্র এক বছরের দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষের কাছে ফাইভ জি পরিষেবা পৌঁছে গিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। গোটা বিশ্ব এখন ভারতের তৈরি বা ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ফোন ব্যবহার করছে বলেও মোদি  দাবি করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরাসিক্স জি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে যাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। টু জি  কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে তিনি ইউপিএ সরকারকে কটাক্ষও  করেন। তিনি বলেন, “আমরা শুধু দেশে ফাইভ জি  প্রসারিত করছি না বরং সিক্স জি প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দেওয়ার দিকেও এগিয়ে যাচ্ছি”। প্রধানমন্ত্রী মোদি  বলেন, “সম্প্রতি, গুগল ভারতে তার পিক্সেল ফোন তৈরির ঘোষণা করেছে। ভারতে স্যামসাংয়ের ফোল্ড ফাইভ  মোবাইল ফোন এবং অ্যাপলের আইফোন ফিফটিন তৈরি করা হচ্ছে। আমরা গর্বিত যে বিশ্ব এখন মেড ইন ইন্ডিয়া মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে”।


রিলায়েন্স জিও এক প্রেস রিলিজে জানিয়েছে, আগে যে দুর্গম এলাকাগুলিতে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হতো না , সেখানেও উচ্চ  গতি ব্রডব্যান্ড পরিষেবা প্রসারিত করা হবে।  সেই জন্যই এই পদক্ষেপ। প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে খুব শীঘ্রই ভারত জুড়ে জিও স্পেস ফাইবার পাওয়া যাবে।  জিও স্পেসফাইবার তার  প্রদর্শনের জন্য ইতিমধ্যেই ভারতের  সব থেকে  দূরবর্তী  অবস্থানের চারটি স্থানকে সংযুক্ত করেছে। সেই স্থানগুলি হল, গুজরাটের গির , ছত্তিশগড়ের কোরবা , ওড়িশার নাবরংপুর, এবং অসমের ওএনজিসি-জোড়হাট।