হিজাব না পরলেই মহিলাদের খতম চাকরি, নিষেধাজ্ঞা গাড়ি-ব্যাঙ্কিং পরিষেবায়

তেহরান, ৩১ জুলাই– মাহসা আমিনির মৃত্যুতে যে বিপ্লব নাড়িয়ে দিয়েছিল ইরানকে দেশটির মোল্লাতন্ত্রকে তা ব্যর্থ করতে চরম নিপীড়ন শুরু করেছে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রশাসন। হিজাব বিদ্রোহ দমনে মরিয়া ইরান সরকার। এবার হিজাব না পরলে নাকি চাকরি খোয়াতে হচ্ছে মহিলাদের। শুধু তাই নয়, কেড়ে নেওয়া হচ্ছে গাড়িও।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, হিজাব না পরলে ইরানের মহিলাদের চাকরিতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে ইরান সরকার। হিজাব না থাকলে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তাঁদের গাড়িও। মামলা গড়াচ্ছে আদালত পর্যন্ত। হিজাব নীতি লঙ্ঘনে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২ হাজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। হিজাব না পরলেই গণপরিবহণ ব্যবহার ও ব্যাংকিং পরিষেবায় নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হচ্ছে মহিলাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি মিলছে না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, “ইরানে ফিরে এসেছে নীতি পুলিশ। মহিলাদের উপর নজরদারি চলছে।”

বলে রাখা ভাল, কয়েকদিন আগে ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র সাইদ মন্তাজারআলমাহদি বলেন, “রাজধানী তেহরান-সহ অন্যান্য শহরের রাস্তায় নীতি পুলিশ টহল দিচ্ছে। মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাকবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা দেখতে নজরদারি চালাচ্ছে।” রাজধানী তেহরান থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখন এই ছবিই দেখা যাচ্ছে।


প্রসঙ্গত, ২০২২-এর ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় ২২ বছরের কুর্দ তরুণী মাহসা আমিনির। ওই তরুণী নাকি ঠিকমতো হিজাব পরেননি। এটাই নাকি ছিল তাঁর অপরাধ। ওই ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের রাস্তায় প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় মেয়েদের। হিজাব বিরোধী সেই আন্দোলনে শামিল হন পুরুষদের একাংশও। বেকায়দায় পড়লেও কিন্তু অবস্থান বদলে নারাজ ইরানের সরকার। তেহরানের দাবি, এই বিক্ষোভের পিছনে হাত রয়েছে আমেরিকার।