দিল্লি, ৫ সেপ্টেম্বর-– মোদির কুরসী নড়াতে তৈরী হয়েছে ২৬টি দল নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ । কিন্তু সেই জোটের কুর্শিই যেন নড়ছে আসন সমঝোতার প্রশ্নে। কিন্তু কোনো রকম দ্বন্দে না কংগ্রেসের ঘোষণা, জট একান্তই না খুললে দিল্লি, পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গের মতো বেশ কিছু রাজ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ করার চিন্তাভাবনা কংগ্রেসে।
‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৃহত্তম শরিক হিসাবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আপ, তৃণমূল-সহ বাকি দলগুলির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পরও যদি দেখা যায় ঐকমত্য আসছে না, সেক্ষেত্রে কেরল মডেলকে সামনে রেখে নির্বাচনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করে ইউপিএ আমলের মতো ‘নির্বাচন পরবর্তী জোট’ তৈরির পরিকল্পনা তৈরি রাখছে কংগ্রেস।কারণ কংগ্রেস ভালোমতই বুঝতে পারছে দিল্লি ও পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টি এবং পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছ থেকে নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী আসন পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে জোট না ভেঙে পরবর্তী জোট গড়ার পথে কংগ্রেস।
তবে দিল্লি ও পাঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কংগ্রেসের ভাবনা যে অমূলক নয় তাই বলছে সূত্র, সূত্রের খবর অনুযায়ী, মুম্বইয়ের বৈঠকেই ইঙ্গিত মিলেছে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে দু’টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ তৃণমূল। অন্যদিকে দিল্লি ও পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টি (আপ) বিধানসভা নির্বাচনের অনুপাতে আসন সমঝোতা করতে চাইছে। সে ক্ষেত্রে দিল্লিতে কংগ্রেসের ভাগ্যে একটি আসনও জুটবে না। আবার পাঞ্জাবের ১৩টির মধ্যে দুই থেকে তিনটি আসন ছাড়তে পারে আপ। মাত্র সাত আসনের দিল্লি নিয়ে অত বেশি মাথা না ঘামালেও পাঞ্জাবে এত কম আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে না কংগ্রেস।
এ প্রসঙ্গে কলকাতায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলছেন, এজেন্সির তৎপরতা বাড়বে। আর এখানে অধীর চৌধুরী ও সিপিএম দ্বিচারিতা করছে। আমাদেরকেও এই গোটা বিষয়টা দেখতে হবে। যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ তো কাজ না করেই করেই অভ্যস্ত। এদের জন্যই তো বাংলার ওয়ার্ক কালচারের বদনাম ছিল ৩৪ বছর ধরে।”
দিল্লির আম আদমি পার্টি বিরোধী ভোট তাদের ও বিজেপির মধ্যে ভাগাভাগি হলেও পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে তার পুরোটাই আসবে কংগ্রেসে, এমনটাই বিশ্বাস কংগ্রেস হাই কমান্ডের। তাই তাদের বিকল্প প্রস্তাব থাকবে গত তিনটি, অর্থাৎ ২০১৭ ও ২০২২ বিধানসভা এবং ২০১৯ লোকসভায় প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে হোক আসন সমঝোতা। ১১৭ আসনের পাঞ্জাব বিধানসভার শেষ দুই নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ৭৭ ও ১৮টি আসন। আপের ঝুলিতে এসেছিল ২২ ও ৯২টি। গত লোকসভায় ১৩টির মধ্যে কংগ্রেস ও আপ জিতেছিল আটটি ও একটি কেন্দ্রে।
সব মিলিয়ে দিল্লি, পাঞ্জাব ও বাংলায় শাসকদলগুলির সঙ্গে হয়তো একসঙ্গে বিজেপি বিরোধী লড়াই করা যাবে না, তা বুঝতে দেরি হচ্ছে না গান্ধী, খাড়গেদের দলের । শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একসঙ্গে বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে লড়তে চাইলেও, একান্ত না হলে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করে নির্বাচন পরবর্তী জোটের পরিকল্পনার দিকেই এগোতে চাইছে ঐতিহ্যবাহী এই দলটি।