কলকাতা, ৮ জুলাই – পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে অবাধ দুষ্কৃতি দৌরাত্ম্য, যার জেরে প্রাণ গেল ৩২ জনের। শুধু শনিবারই প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। কেন্দ্রীয় বাহিনী এনেও থামানো গেল না সন্ত্রাস । পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাণহানির সংখ্যা ৩২ ছুঁয়ে ফেলল। সেই আবহে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় আবারও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা স্বীকার করে নিলেন এই নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ বলা সম্ভব নয়।
শনিবার ভোটগ্রহণ পর্বে সকাল থেকেই সংঘর্ষ, অশান্তি, খুনের ছবি। লাগামহীন সন্ত্রাস আর উশৃঙ্খলতার চরম উদাহরণ। শাসক দলের কর্মী খুন হয়েছেন ৮ জন। এই আবহে কমিশনার বলেন, “অপরাধ ঘটলে প্রথমে মামলা দায়ের হয়। তার পর তদন্ত এবং গ্রেফতারি। আশাকরি পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” অশান্তির খবর কমিশনের কাছে পৌঁছচ্ছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে রাজীব সিনহা বলেন, ” অভিযোগ আসছে। এই নিয়ে নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান দেওয়া সম্ভব নয়। ৬০০-র মতো অভিযোগ এসেছে। কমিশন সমাধানও করছে।” আগামী দিনেও অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। যদি প্রয়োজন পড়ে কোনও কোনও বুথে পুনর্নির্বাচনও হতে পারে, সেই আশ্বাসও দিয়েছেন রাজীব সিনহা। তিনি জানিয়েছেন,”বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ এসেছে। সেগুলির সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দরকার পড়লে পুনর্নির্বাচন হবে।”
রাজীব জানিয়েছেন, অভিযোগ এলেই তিনি সংশ্লিষ্ট জেলার ডিএম, এসপিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে কমিশনকে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাতে ব্যবস্থাপনা। আমাদের কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন কাজ করছে।’’
তবে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে একথা বলা সম্ভব নয় বলে শনিবার স্বীকার করে নেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে এমন আশ্বাস দেওয়ার পরও কেন এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি যে ভোট দিতে যেতেই ভয় পেয়েছেন সাধারণ মানুষের ? একে কি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বলা সম্ভব ? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজীব সিনহা বলেন, “গন্ডগোল, অশান্তির খবর এসেছে। মানুষ নিজের মতামতের ভিত্তিতে অভিযোগ জানান। সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। সবকিছু শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলা সম্ভব নয়। আবার শুধু অশান্তিই হয়েছে, এমনও বলা যায় না।” যেমন যেমন অভিযোগ আসবে, সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি ।