পটনা, ১৩ জুন– নীতীশের প্রতি অসন্তোষের প্রভাবে দলেই ফাটল। যার জেরে নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভা থেকে সরে গেল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জীতন রাম মাঝির দল হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা। জীতনের পুত্র সন্তোষ ছিলেন নীতীশের মন্ত্রিসভার তফসিলি জাতি ও উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের প্রতি অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যে ঘোষণাও করেছেন পদত্যাগী মন্ত্রী। ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রতি অনাস্থা প্রমান করেন তিনি। পদত্যাগের পর তিনি বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ হিন্দুস্থানী আওয়াম মোর্চাকে শেষ করতে চান। দলের অস্তিত্ব রক্ষা করতেই ইস্তফা দিলাম।’
নীতীশের প্রতি তাঁর এতটাই অসন্তোষ যে পদত্যাগপত্র মুখ্যমন্ত্রীকে না দিয়ে সন্তোষ তা দিয়েছেন অর্থ ও পরিষদীয় মন্ত্রী জীতেন্দ্র চৌধুরীকে। যদিও নীতীশ এই পদত্যাগ পত্র গ্রহণ না করে অর্থমন্ত্রীকেই মধ্যস্থকারী হিসেবে জীতনরাম ও সন্তোষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
অন্যদিকে, নীতীশের সঙ্গে জিতনের গোলমালের সুযোগ নিতে বিন্দুমাত্র দেরি করেনি বিজেপি। এই ফাটলের সুযোগ নেওয়া যে বিজেপি আগেই শুরু করে দিয়েছিল তার প্রমান এপ্রিলের শেষে আচমকাই দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জীতন। বৈঠকের কারণ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। তবে বিভিন্ন সূত্রে খবর, জীতনকে বিহারে বিজেপির জোটে নিতে আগ্রহী শাহ। বিনিময়ে জীতন তাঁর নেতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পুরী ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারত রত্ন ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। প্রাক্তন এই দলিত মুখ্যমন্ত্রীর দলের অন্তত পাঁচ শতাংশ ভোট আছে। বিজেপি সেই কারণে শাসক মহাজোটে ফাটল ধরাতে মরিয়া।
উল্লেখ্য, আগামী ২৩ জুন বিহারের পাটনাতেই নীতীশের ডাকে বসতে চলেছে বিরোধী দলগুলির সম্মেলন। তার আগে শরিক মন্ত্রীর ইস্তফাকে রাজ্যের মহাজোটে ফাটল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাৎপর্যপূর্ণ হল, ২৩ এর সমাবেশে নীতীশ রাজ্যের এই শরিক দলকে আমন্ত্রণ জানাননি।
আসলে জীতন রামকে নিয়ে অনেক দিন ধরেই শাসক জোটে গোলমাল চলছে। ঘরোয়া আলোচনায় এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আগামী লোকসভা ভোটে তাঁর দলের জন্য পাঁচটি আসন দাবি করেছেন। নীতীশ সেই দাবি মানতে নারাজ। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে জীতনের দল তিনটি আসনে লড়াই করে একটিতেও জিততে পারেনি।