• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃ্ষ্টির সঙ্গে তুষারপাতের সম্ভাবনা, উদ্ধারকাজে বাধা হতে পারে প্রকৃতি 

উত্তরকাশী, ২৭ নভেম্বর – ফের নতুন করে আশার আলো,  উত্তরকাশীর টানেলে ১৬ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক বৃহস্পতিবার অন্ধকূপ বেরিয়ে আসতে পারেন, এমনটাই জানাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। এবার শুরু হচ্ছে  শাবল-গাঁইতি দিয়ে খননকাজ। অগার যন্ত্রের ভাঙা যে টুকরোগুলি ধ্বংসস্তূপে আটকে ছিল সোমবার সকালে তা সরিয়ে দিয়েছেন শ্রমিকেরা। দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর

National Disaster Response Force (NDRF) personnel prepare to enter into the tunnel as rescue operation moves into its final phase, for workers trapped in the Silkyara under construction road tunnel, days after it collapsed in the Uttarkashi district of India's Uttarakhand state on November 22, 2023. Indian rescuers have drilled two-thirds of the way through debris towards 41 workers trapped in a collapsed road tunnel, officials said on November 22, warning that the next 24 hours could be critical. (Photo by Arun SANKAR / AFP)

উত্তরকাশী, ২৭ নভেম্বর – ফের নতুন করে আশার আলো,  উত্তরকাশীর টানেলে ১৬ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক বৃহস্পতিবার অন্ধকূপ বেরিয়ে আসতে পারেন, এমনটাই জানাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। এবার শুরু হচ্ছে  শাবল-গাঁইতি দিয়ে খননকাজ। অগার যন্ত্রের ভাঙা যে টুকরোগুলি ধ্বংসস্তূপে আটকে ছিল সোমবার সকালে তা সরিয়ে দিয়েছেন শ্রমিকেরা। দু’দিক থেকে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উপর থেকে উল্লম্ব ভাবে খোঁড়া শুরু হয়েছে রবিবারই। যন্ত্রাংশ সরানোয় সোমবার সামনের দিক থেকে খোঁড়ার কাজও শুরু হয়ে যাবে। সামনের দিক থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে অধিকাংশ রাস্তাই খোঁড়া হয়েছে। বাকি কেবল ১০ থেকে ১২ মিটার। হাত দিয়ে খুঁড়ে সেই রাস্তা অতিক্রম করে ফেলতে চান উদ্ধারকারীরা . এ ছাড়া, উল্লম্ব ভাবে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর জন্য মোট ৮৭ মিটার পথ খোঁড়া দরকার। রবিবার প্রথম দিকে ২০ মিটার পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে মোট ৩৭ মিটার পর্যন্ত খোঁড়ার কাজ শেষ হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে উল্লম্ব ভাবে খোঁড়াখুঁড়ি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে যদি এই প্রক্রিয়াও কোনওভাবে ব্যর্থ হয় তাহলে ড্রিফট প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে।খনিতে রাস্তা তৈরির জন্য ড্রিফট টেকনোলজির প্রয়োগ করা হয়। এই উপায়ে ছোট ছোট গর্ত বা সুড়ঙ্গ খোঁড়া যায়। ছোট ছোট সুড়ঙ্গ তৈরি করে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা হবে। তবে উদ্ধারকাজের গতি পুরোটাই নির্ভর করছে সুড়ঙ্গের মাটির উপরে। মাইক্রো টানেলিং বিশেষজ্ঞ ক্রিস কুপার বলেন, “দ্রুত মাটি কাটার চেষ্টা চলছে। ঠিক কতখানি সময় লাগবে তা এখনই জানা যায়নি। সেনার তত্ত্বাবধানে চলছে উদ্ধারকাজ। তবে শ্রমিকদের উদ্ধার করা নিয়ে আমরা আশাবাদী।” 

এই টানেলের অন্য প্রান্ত বারকোটের দিকে। সেদিক থেকেও শুরু হচ্ছে খননকাজ। ৪৮৩ মিটার সুড়ঙ্গের ১০ মিটারের মতো সেদিক থেকেও খোঁড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ওএনজিসি-কে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের সাহায্যে মোট ৫ কিমি রাস্তা তৈরি করতে হবে।

তবে এবার উদ্ধারকাজে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে প্রকৃতি। উত্তরকাশীতে বৃষ্টি এবং সেই সঙ্গে বরফ পড়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। বৃষ্টি ও তুষারপাত শুরু হলে উদ্ধারকাজ আবার ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৌসম ভবন সূত্রে রবিবারই জানানো হয়, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবারও মৌসম ভবন জানায়, সোমবার থেকে হালকা থেকে মাঝারি পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে। মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। আসতে পারে হড়পা বানও। ভারী বৃ্ষ্টির পাশাপাশি রয়েছে তুষারপাতের সম্ভাবনাও।

পাহাড়ে বৃষ্টি নামলে উদ্ধারকাজে আরও বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে ধস নামারও প্রবল সম্ভাবনা। টানেলের যে অংশের মাটি খোঁড়া  হচ্ছে, তা বৃষ্টির জলে ধুয়ে ধস নামতে পারে। তুষারপাতের কারণেও ব্যাহত হতে পারে উদ্ধারকাজ।

গত শুক্রবার উত্তরকাশীর টানেল খোঁড়ার সময় যন্ত্র ধ্বংসস্তূপের ভিতরে লোহার কাঠামোয় আটকে যায়। যন্ত্রের অনেক অংশ ভেঙে যায়। কিছু কিছু যন্ত্রাংশ ভিতরে আটকে ছিল। আটকে থাকা যন্ত্রাংশ না সরানো পর্যন্ত কাজ এগোনো যাচ্ছিল না। শুক্রবার থেকেই যন্ত্রাংশ সরানোর কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু যন্ত্রের ব্লেডগুলি এমন ভাবে লোহায় আটকে ছিল যে, তা সরাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় উদ্ধারকারীদের। ভারী যন্ত্রটিও সুড়ঙ্গ থেকে বার করে আনতে সময় লাগছিল। সোমবার সকালে সেই সমস্ত  কাজ শেষ হওয়ার পর ফের শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।