গোধরাকাণ্ডে অভিযুক্তদের মুক্তি দিতে নারাজ গুজরাত সরকার, অবস্থান জানাল আদালতে

ভদোদরা, ৩ ডিসেম্বর– গোধরা কাণ্ডে অভিযুক্তদের ছাড়তে মোটেই রাজি নয় গুজরাত সরকার। সেই কথা শীর্ষ আদালতে জানাল সরকার। 

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগানোর ঘটনায় সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির বিষয়টিকে মানবিক দিক থেকে দেখতে রাজি নয় সরকারের তরফে সে কথা স্পষ্ট করে দিয়ে এলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। সাজাপ্রাপ্তদের অনেকেই দীর্ঘ সতেরো-আঠারো বছর ধরে জেল খাটছেন। সে কথা উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত এদের মুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে এখনই ‘সদয়’ হতে নারাজ গুজরাতের বিজেপি সরকার।

সাজাপ্রাপ্তদের অধিকাংশই জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। ২০১৮ সাল থেকে সেই আবেদনের কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং পিএস নরসীমহার বেঞ্চ দোষী সাব্যস্তদের মুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলে। এ ক্ষেত্রে দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে যাঁরা ট্রেনে পাথর ছোড়ায় অভিযুক্ত, তাঁদেরও অনেকে প্রায় দুই দশক জেল খেটে ফেলেছেন। কিন্তু সলিসিটর জেনারেল আদালতকে জানান, বিষয়টিকে শুধু পাথর ছো়ড়ায় সীমাবদ্ধ করে ফেললে ভুল করা হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁর যু্ক্তি, ট্রেনের জ্বলন্ত কামরা থেকে যাত্রীরা যাতে বেরোতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতেই পাথর ছোড়া হয়েছিল। অবশ্য সাজাপ্রাপ্তদের অপরাধের বিষয় খতিয়ে দেখে তাদের মুক্তির বিষয়টি আলাদা ভাবে বিচার বিবেচনা করারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।


২০১৭ সালে গুজরাত হাই কোর্টে এই ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে, ২০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ৬৩ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আপিল করে গুজরাত সরকার।

২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গুজরাতের গোধরা স্টেশনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় সাবরমতী এক্সপ্রেসের এস ৬ কামরাকে। এই ঘটনায় প্রাণ হারান ৫৯ জন, যাঁদের প্রায় প্রত্যেকেই করসেবক এবং উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা থেকে তাঁরা ফিরছিলেন। এই ঘটনার পরই দাঙ্গা শুরু হয় গুজরাত জুড়ে, যা গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গা নামে পরিচিত।