কলকাতা , ১০ এপ্রিল – আগাম কোন নোটিস ছাড়াই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সকাল ১১টা নাগাদ আচমকাই কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে রাজ্যপালের কনভয়। উপাচার্য বা রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছনোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছন তিনি।রাজ্যপালের ক্যাম্পাসে আসার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি রওনা দেন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। এই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট ও সিন্ডিকেট রুম ঘুরে দেখেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার প্রায় ৩০ মিনিট বাদে ক্যাম্পাসে পৌঁছন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। রাজ্যপাল উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়, প্রাথমিক ভাবে তা জানা যায়নি। সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসংস্কৃতি দেখাই রাজ্যপালের উদ্দেশ্য ছিল।
রাজভবনের একটি নির্দেশিকাকে ঘিরে সম্প্রতি রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে চাপান উতোর শুরু হয় । নির্দেশিকায় বলা হয় রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক কাজের রিপোর্ট আচার্যের কাছে পাঠাতে হবে। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যপালের আগাম অনুমোদন নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের কাছে রাজভবন থেকে এই মর্মে নির্দেশও পৌঁছেছে। এরপরই এই নির্দেশিকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘ আমি উচ্চশিক্ষা দফতরের সচিবকে আইনি পরামর্শ নিতে বলেছি, চিঠির বৈধতা আছে কিনা তা দেখার জন্য। ’’ একই সঙ্গে ওই চিঠি রাজভবনের তরফে প্রত্যাহার করে নেওয়ার বার্তাও দেন শিক্ষামন্ত্রী।
ব্রাত্য জানান, উচ্চশিক্ষা দফতরকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে উপাচার্যদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে চিঠি পাঠানো যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। বর্তমান রাজ্যপালকে নিয়ে প্রথম দিকে খুশিই ছিল বাংলার শাসকদল। তখন বিজেপির অভিযোগ ছিল, রাজ্যপাল তৃণমূলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন। রাজভবনের প্রধান সচিব পদ থেকে নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত শুরু হয়। রাজভবনের তরফে অস্থায়ী উপাচার্যদের পাঠানো নির্দেশিকাকে ঘিরে সেই সংঘাত আরও বাড়ে। এই আবহে রাজ্যপালের কাউকে না জানিয়েই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাওয়া ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দাবি , রাজ্যপাল আসার ব্যাপারে কোনও আগাম খবর ছিল না। উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য জানান , বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে রাজ্যপাল যে কোনও সময় যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যেতে পারেন।