ভোপাল, ৩০ অক্টোবর– শরীরের যে কোন হাড় ভাঙলেই সর্বনাশ৷ সে যদি হয় হাত বা পায়ের হাড় তাহলে তো সেই ব্যান্ড-এইড বা প্লাস্টার লাগিয়ে বসে থাক ঘরে৷ এতদিন, শরীরের কোনও টিসু্য ছিঁডে় গেলে, বা গভীরভাবে কেটে গেলে, সেলাইয়ের যন্ত্রণা সহ্য করতে হত৷ হাড় ভেঙে গেলে, প্লাস্টার করা ছাড়া গতি ছিল না৷ কিন্ত্ত, এবার সেই দিন শেষ৷ কারণ এবার এমন এক পদ্ধতি এসে গেছে যাতে একটা আঠা দিয়েই জোড়া যাবে ভেঙে যাওয়া হাড়৷ সঙ্গে ছিঁডে় যাওয়া ত্বকও!
আবার ওই একই আঠা দিয়ে সারাই করা যাবে ভাঙা চেয়ারও৷ আঠাটি কাজ করে জলের নীচেও, অর্থাৎ, জলের নীচেও আঠাটি ব্যবহার করে হাড়, ত্বক বা অন্য যে কোনও কিছু জুডে় দেওয়া যাবে৷
ভোপালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স ইনস্ট্রাকশন অ্যান্ড এক্সপ্লোরেশন এবং হরিয়ানার ইউনিভার্সিটি অব হেলথ কেয়ার অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেসের গবেষকরা এই আঠাটি তৈরি করেছেন৷ সবথেকে বড় কথা, এটি বায়োডিগ্রেডেবল৷ অর্থাৎ, ব্যবহারের পর এটি পচে মিশে যায় প্রকৃতির সঙ্গে৷ কাজেই পরিবেশ দূষিত হওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই৷ এখন পর্যন্ত আঠাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘এ৩০’৷
গবেষকদের দাবি, এ৩০ ব্যবহার করে, বিনা যন্ত্রনায় অল্প সময়ে কলা বা হাড় জোড়া যাবে৷ আইআইএসইআর-এর অধ্যাপক আশীষ শ্রীবাস্তব ও ডা. তন্ময় দত্ত এবং স্কুল অব হেলথ কেয়ার অ্যান্ড অ্যালাইড সায়েন্সেসের ডা. আশীষ শর্মা এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ সম্প্রতি ‘কেমিস্ট্রি’ জার্নালে তাঁদের গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে৷ইতিমধ্যেই এই আঠাটি ভারতীয় পেটেন্ট পেয়েছে৷ অধ্যাপক আশীষ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এই ‘ক্লিয়ার সিন্থেটিক বায়োমেডিকাল আঠা’ শুধু বায়োডিগ্রেডেবলই নয়, প্রকৃতির সঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ৷ এর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, এটি মানুষের কলার জন্য ক্ষতিকর বা বিষাক্ত নয়৷ মানব কলা, হাড়, ডিমের খোসা, কাঠের মতো অসংখ্য পৃষ্ঠকে এই আঠা জুড়তে পারে৷ সেইসঙ্গে এটি বাতাসে এবং জলের নীচে সমানভাবে কাজ করে৷ অতিরিক্ত কোনও রাসায়নিক পদার্থের ছাড়াই এটি কিছুক্ষণের মধ্যে শুকিয়ে শক্তও হয়ে যায়৷