চেন্নাই, ২৬ আগস্ট – ট্রেনের কামরায় গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগে মৃত্যু হল ১০ জনের, আহত হয়েছেন ২০ জন। শনিবার ভোরে মর্মান্তিক এবং ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে লখনউ থেকে রামেশ্বরগামী ভারত গৌরব ট্রেনে। শনিবার ভোর ৫.৩০ নাগাদ মাদুরাই রেলস্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা তীর্থযাত্রী ভর্তি এই ট্রেনটির একটি কামরায় আগুন লাগে। দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রেল বিবৃতিতে স্বীকার করা হয়েছে , ওই কামরায় বেআইনিভাবে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বালাসোর ট্রেন দুর্ঘটনার পর আবার এভাবে ট্রেন দুৰ্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় ট্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই কামরা ছাড়া বাকি কোনও কামরায় সে ভাবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে রেল সূত্রে খবর। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায় ট্রেনের যাত্রীরা কামরায় রান্না করছিলেন। তখন কোনভাবে তাঁদের গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন লাগে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীদের দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। সকাল ৭.১৫ নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। ওই কামরা ছাড়া বাকি কোনও কামরায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে রেল সূত্রে জানা গেছে।
মাদুরাইয়ের জেলাশাসক এম এস সঙ্গীতা জানান ‘‘আজ ভোর ৫.৩০ নাগাদ মাদুরাই স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রেনটির একটি কামরায় আগুন লেগে যায়। উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত তীর্থযাত্রীরা ওই ট্রেনে ছিলেন। তাঁরা কফি তৈরির জন্য কামরায় গ্যাস জ্বালাতেই সিলিন্ডার ফেটে যায়। আমরা এখনও পর্যন্ত ৯ টি দেহ উদ্ধার করতে পেরেছি।’’
দক্ষিণ রেলওয়ে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার, ২৬ আগস্ট ভোর ৫.১৫ মিনিটে ট্রেনের বগিতে আগুন ধরে। স্টেশনে কর্তব্যরত এক আধিকারিক ঘটনাটি দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করা হয়। দমকল কর্মীরা দ্রুত এসে আগুন নিভিয়ে দেয়। দক্ষিণ রেলওয়ে বিবৃতিতে আরও জানায়, ওই বগিটি ছিল প্রাইভেট। তাতে নিয়ম-বিরুদ্ধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেখান থেকেই আগুন ধরে যায়।
রেল সূত্রে খবর, তামিলনাড়ুতে পুনালুর-মাদুরাই এক্সপ্রেসের ওই কামরাটি ব্যক্তিগত ভাবে ভাড়া নেওয়া হয়। ওই কামরার যাত্রীরা এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে। ওই কামরার যাত্রীরা উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে আসছিলেন। রেল সূত্রে খবর, ওই কামরাতে একটি গ্যাস সিলিন্ডার। সেখান থেকেই এই আগুন লাগে বলে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অনুমান। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রেল এবং দমকল কর্মীরা। সকাল ৭টা ১৫ নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পোড়া কামরা থেকে মৃতদেহগুলি বার করে আনা হয়। আহতদেরও তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা নিহত ৬ জন পর্যটককে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত চলছে।