কলকাতা, ২৮ ফেব্রুয়ারি — দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক গণ ধর্ষণের মামলায় ফের পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করল আদালত। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পুলিশের কাছে জানতে চান , দশ দিনের মধ্যেও কেন নির্যাতিতার কোনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি ? পুলিশের জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। নির্দেশ দেন, মঙ্গলবার দুপুর ৩টের মধ্যেই গোপন জবানবন্দি নেওয়ার কাজ শেষ করতে হবে পুলিশকে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার বাঁকরাহাট আউটপোস্টে এক মহিলা গণধর্ষণের অভিযোগ জানাতে আসেন। কিন্তু সেদিন তাঁর কোনও কথা শোনা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে অভিযোগ না নেওয়ার কারণ জানতে চান বিচারপতি মান্থা।
পুলিশ জানিয়েছে, সেদিন বাঁকরা আউটপোস্টে কোনও লেডি কনস্টেবল ছিল না। তাই এফআইআর নেওয়া যায়নি। যা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘৩৭৬ ধারায় অভিযোগ। কিন্তু কোনও লেডি কনস্টেবল নেই? এর অর্থ কী? ১০ দিন হয়ে গেছে এখনও লেডি কনস্টেবল নেই।’
তারপরই বিচারপতি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এটা কী চলছে? আপনারা পুরো সিস্টেমকে ভেঙে দিচ্ছেন।’ এই মামলায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। ১০ দিন কেটে গেলেও নির্যাতিতার পরনের পোশাক বা মোবাইল কিছুই সংরক্ষন করা হয়নি কেন প্রশ্ন করেন তিনি।
অবিলম্বে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন বিচারপতি এই মামলায় মন্তব্য করেন, পুলিশের এমন গা ছাড়া ব্যবহার দেখে যন্ত্রণা পাচ্ছে কোর্ট। এতদিনে কেন কোনও গ্রেফতার নেই, তাও প্রশ্ন ওঠে আদালতে। বিষ্ণুপুর থানা ও বাঁকরাহাট আউট পোস্টের ভূমিকা ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপারকে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। এছাড়াও ঘটনাক্রম খতিয়ে দেখে সুপারকে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালত বলে, নির্যাতিতাকে এফআইআর তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগামী শুনানির আগে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। এছাড়াও তদন্তে আইওকে সাহায্য করার জন্য একজন সিনিয়র অফিসারকে নিয়োগ করতে হবে।