• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ট্রাক চালকদের বিক্ষোভে স্তব্ধ হওয়ার মুখে জ্বালানি সরবরাহ 

দিল্লি, ২ জানুয়ারি – দেশজুড়ে ট্রাক সংগঠনগুলির হরতালে প্রতিবাদে অচল হয়ে পড়েছে দেশের পরিবহণ ব্যবস্থা। হরতাল শুরু করেছে একাধিক ট্রাক সংগঠন, যার প্রভাব পড়েছে এরাজ্যেও। জাতীয় সড়কগুলিতে ট্রাক থামিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চালাকরা। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষের তরফে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি। গোটা দেশে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পরিবহন ব্যবস্থা। এরকম চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিনে জ্বালানির

দিল্লি, ২ জানুয়ারি – দেশজুড়ে ট্রাক সংগঠনগুলির হরতালে প্রতিবাদে অচল হয়ে পড়েছে দেশের পরিবহণ ব্যবস্থা। হরতাল শুরু করেছে একাধিক ট্রাক সংগঠন, যার প্রভাব পড়েছে এরাজ্যেও। জাতীয় সড়কগুলিতে ট্রাক থামিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চালাকরা। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষের তরফে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি। গোটা দেশে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে পরিবহন ব্যবস্থা। এরকম চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিনে জ্বালানির ব্যাপক সংকট দেখা দেবে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

দেশজুড়ে গাড়ি ও ট্রাকচালকদের প্রতিবাদের পিছনে রয়েছে ভারতীয় দণ্ড সংহিতার নয়া আইন। ব্রিটিশ আমলে তৈরি ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বাতিল করে এবার কার্যকর হবে দণ্ড সংহিতা। পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নতুন সাজার কথা বলা হয়েছে সেখানে। বলা হয়েছে, ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর ক্ষেত্রে কারোওর মৃত্যুর পর যদি গাড়ির চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান, তাহলে ৭ থেকে ১০ বছরের সাজা হবে, জরিমানা হবে ৭ লক্ষ টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে না জানালেও এই সাজার মুখে পড়বেন গাড়ি চালকরা।

ইন্ডিয়ান পেনাল কোডে এর আগে ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও শাস্তির উল্লেখ ছিল না। পথ দুর্ঘটনায় কারোওর মৃত্যু হলে দোষীকে সর্বোচ্চ ২ বছরের জেলের সাজা দেওয়া হত। কিছু ক্ষেত্রে জরিমানাও হত। কিন্তু নতুন দণ্ড সংহিতার ‘হিট অ্যান্ড রান’ আইনে গাড়িচালকদের ওপরই যাবতীয় দায় বর্তেছে। গোটা দেশের বাস ও ট্রাক চালকদেরঅভিযোগ, ‘হিট এন্ড রান’ নতুন আইনে চালকদের ওপর সব দোষ পড়ছে। এই সাজা ৭ থেকে ১০ বছর কমিয়ে ১ থেকে ২ বছর করা উচিত। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষের তরফে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

এই প্রতিবাদ আন্দোলনে ট্রাকচালকদের সঙ্গে সামিল হয়েছেন তেলের ট্যাঙ্কার চালকরাও। এর ফলে, জ্বালানি তেলের সরবরাহে ঘাটতি হতে পারে।  ভারতের প্রায় সব শহরে চলছে তেল ফুরিয়ে যাওয়ার আতঙ্ক থেকে জ্বালানির কেনা। ট্রাকচালকরা ৩ দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন । তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পাম্পে পাম্পে জ্বালানি সরবরাহকারী হাজার হাজার ট্যাঙ্কারের চালকরাও। বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাসচালকরাও। ট্যাঙ্কার-চালকরা বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ইতিমধ্যেই ভারতের বেশ কয়েকটি জায়গায় জ্বালানী সংকট তৈরী হয়েছে। মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জায়গায় কোনও পাম্পেই আর কোনও তেল নেই বলে খবর এসেছে। সামনের কয়েকদিনে, কলকাতা-সহ ভারতের অন্যান্য শহরেও এই জ্বালানি সংকট দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পেট্রোল পাম্প ডিলাররা।
নাগপুর, হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালাতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। হিমাচলে ট্রাক ও বাস চালকদের ধর্মঘট ইতিমধ্যেই পর্যটন ক্ষেত্রে বড় আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সংবাদ প্রতিবেদনগুলি অনুসারে, নয়া আইনের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন ট্যাক্সি চালক ও পরিবহণ সংস্থাগুলির মালিকরাও। ফলে, ক্রিসমাস ও নিউ ইয়ারকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে আসা পর্যটকরা, বাড়ি ফেরার গাড়ি পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মধ্য প্রদেশের ভোপালে পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে অফিস-কলেজে যেতে চূড়ান্ত অসুবিধার মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। ভোপালে বিভিন্ন অংশে রাস্তায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে পথ অবরোধ করা হয়েছে। রাজস্থানেও জায়গায় জায়গায় পথ অবরোধ করেছেন ট্রাক-বাস-ট্যাক্সি চালক ও মালিকরা। অনেক জায়গায় পুলিশ বল প্রয়োগ করতে গেলে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন আন্দোলনকারীরা। পশ্চিমবঙ্গেও ধূলাগড়, ডানকুনি-সহ বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করেছেন ট্রাকচালক ও বিভিন্ন পরিবহণ সংগঠনগুলি।