দিলীপ গুহ
চতুর্থ বাংলা নাট্য মেলার আয়োজন হল দিল্লির মুক্তধারা অডিটোরিয়াম। বেঙ্গল এসোসিয়েশন দিল্লির তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এই নাট্য মেলায় মঞ্চস্থ হলো দুটি নাটক।
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রসার ও প্রচারে বেঙ্গল এসোসিয়েশন প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। আয়োজিত দুই নাটকের মধ্যে একটি দিল্লির সৃজনী সোসিওলজি কালচারাল আসোসিয়েশনের, “সিমলির গল্পটা”।
অন্য নাটকটি ছিল দিল্লীর প্রগতিশীল নাট্যগোষ্ঠী ‘ থিয়েটার প্ল্যাটফর্ম ‘ এর বহু প্রতীক্ষিত নাটক ” সূর্যের অন্তিম কিরণ থেকে সূর্যের প্রথম কিরণ পর্যন্ত “।
অভিজিৎ ব্যানার্জী নাটক ও নির্দেশিত “সিমলির গল্পটা” একটি বহুপরিচিত বিষয় নিয়ে তৈরী। মানসিক ভাবে না বেড়ে ওঠা সিমলির জীবনের বিপ্পজনক দিক গুলি এবং তার বাবার মনের মধ্যে মেয়ের সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চাপা উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক।
অদ্ভুত মুন্সীয়নায় বাবার চরিত্রটি মঞ্চে এঁকেছেন অর্ণব সাহা। বছর ৪৫ এর অভিনেতা দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে অসামান্য শিল্প দক্ষতায় প্রায় ৩৫-৩৬ বছরের একটি মেয়ের বাবার চরিত্রে অভিনয় করা যায়।
খুব সাবলীল ভাবে এক অসহায়, হেরে যাওয়া মানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন মঞ্চে। মেয়েকে বিষ খাওয়ানোর সময়ে সামান্য অতিরঞ্জন ছাড়া, সারা নাটকে অর্ণব ছিলেন খুব স্বাভাবিক ও বলিষ্ঠ।
সিমলির ভূমিকায় আসর মাত করেছেন মিঠু দে দাস। প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি, চলাফেরা, সংলাপ, ও নাট্য আবেদনে মিঠু জিতে নিয়েছেন হল ভর্তি দর্শকের মন। খুবই উঁচু মানের এই অভিনেত্রী, দাবী রাখেন, নাট্য জগতে অনেক ওপরে যাওয়ার।
অন্যান্য চরিত্রে সোনালি ব্যানার্জী ( ডাক্তার ), সৌম্য মজুমদার ( অর্জুন ), দেবমাল্য ব্যানার্জী ( চন্ডিদাস ), তনিমা রায় ( আয়া ) প্রবীর চ্যাটার্জী ( পুলিশ অফিসার ) যথাযথ।
অন্য নাটকটি পূর্ণেন্দু ভট্টাচার্যের বলিষ্ঠ পরিচালনায় সূর্যের অন্তিম কিরণ থেকে সূর্যের প্রথম কিরণ পর্যন্ত “নাটকটিও দর্শকদের মন কেড়েছে বলাই যায়।
সুরেন্দ্র ভর্মার মূল হিন্দি নাটকের বাংলা অনুবাদ করেছেন ভাস্বতী ঘোষ। এটি একটি তিন অঙ্কের পূর্ণাঙ্গ নাটক, মোট চরিত্র সংখ্যা সাত। এক সূর্যাস্ত থেকে চন্দ্রোদয়ের সাথে সাথে যাদের অপরিবর্তনীয় জীবন বদলে যায় সম্পূর্ণ ভাবে গল্পের প্রেক্ষাপট দশম শতাব্দীর মল্ল রাজ্য। সেখানকার জনপ্রিয়, পরাক্রমশালী রাজা ওক্কাক অপুত্রক। পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে আক্রমণের অহেতুক আশঙ্কায় অমাত্য পরিষদ নপুংসক রাজা ও অসম্মত রাণীকে বাধ্য করে উত্তরাধিকারীর জন্য তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়োগপ্রথায় সম্মতি দিতে।
রাজা ওক্কাকের ভূমিকায় সুপ্রতিষ্ঠিত অভিনেতা শ্রী পলাশ দাসের অভিনয় এককথায় অনবদ্য ! অন্যান্য চরিত্রে প্রতোষ সর্বাশীষ ভট্টাচার্য , মহত্তারিকা তন্দ্রা রায়, মহামাত্য শঙ্কর দে, মহাবলাধিকৃত কুশল ব্যানার্জী এবং রাজপুরোহিত সুবাস রায় আপন ভূমিকায় যথাযথ। মহাদেবী শীলবতীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুপ্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী রুনা ভট্টাচার্য। একাধিক পুরষ্কারপ্রাপ্ত রুনা এ