উত্তরকাশী, ২১ নভেম্বর – উত্তরকাশীর টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ্যে আনলো উদ্ধারকারী দল। মঙ্গলবার সকালে ৪১ জন শ্রমিকের ভিডিও দেঝা যায়। সোমবার ৬ ইঞ্চির একটি পাইপ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয়।ওই পাইপের মধ্যে দিয়েই একটি এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা পাঠানো হয়। টানেলের ভিতর ৪১ জন শ্রমিক কী করছেন সবই দেখা গিয়েছে উদ্ধারকারী দলের ক্যামেরায়।
ভিডিওর শুরুতেই টানেলের মুখ দিয়ে কয়েক জন শ্রমিককে উঁকি মারতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায় , শ্রমিকরা হেলমেট পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে কথা বলছিলেন তাঁরা। যাঁরা উঁকি মারছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকে এক জন পাইপে হাত ঢুকিয়ে ক্যামেরা তুলে নেন। টানেলের ভিতরের ছবি দেখা যায়। যাঁরা আটকে রয়েছেন, প্রত্যেককে ক্যামেরার মাধ্যমে দেখাতে বলেন উদ্ধারকারীরা। ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসে ভিতরের দৃশ্য।পাইপের মধ্যে দিয়ে পাঠানো খাবার তাঁদের কাছে পৌঁছয়। দিল্লি থেকে উত্তরকাশিতে ক্যামেরা এসে পৌঁছয় সোমবার সন্ধেবেলায়। এরপরই ক্যামেরা শ্রমিকদের কাছে পাঠানোর চেষ্টা সফল হয় এবং শ্রমিকদের ভিডিও দেখার পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়।
গত ১০ দিন ধরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে তাঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু এখনও তেমন কিছু করা যায়নি। যত সময় এগোচ্ছে, উদ্বেগ বাড়ছে সর্বস্তরে । পাইপের মাধ্যমে উদ্ধারকারীরা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। পাইপ দিয়ে সোমবার শ্রমিকদের কাছে খিচুড়ি, ডালিয়া এবং নানা রকম ফল পাঠানো হয়।
উদ্ধারকারীরা পাইপের মাধ্যমে এন্ডোস্কোপিক ফ্লেক্সি ক্যামেরা সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠিয়েছিলেন। তাতেই আটকে পড়া শ্রমিকদের প্রথম ভিডিয়োটি ধরা পড়েছে। সোমবার নতুন পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠানো হয় একটি মোবাইল ফোন এবং চার্জার। সুড়ঙ্গের অন্তত ৬০ মিটার গভীরে শ্রমিকেরা আটকে । এখনও পর্যন্ত মাত্র খোঁড়া সম্ভব হয়েছে মাত্র ২৪ মিটার । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়মিত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে উদ্ধারকাজের অগ্রগতির খবর নিচ্ছেন। ফোন করেন মঙ্গলবারও। উপর দিক থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। মঙ্গলবারই নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে দেওয়া হয়েছে সুড়ঙ্গের কাছে।
টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী ধামি লেখেন, “উত্তরকাশীর নির্মীয়মাণ সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গের ভিতর আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারকাজ চলছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে ৬ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন টানেলের ভিতরে পাঠানো হয়েছে। এখন তার মধ্য দিয়ে খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী সহজেই কর্মীদের কাছে পাঠানো যাবে।” আমরা সকল শ্রমিকদের নিরাপদে উদ্ধার করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালাচ্ছি।”
সঙ্গত, গত ১২ নভেম্বর দীপাবলির দিনই অন্ধকার নেমে এসেছিল সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজে জড়িত ৪১ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জীবনে। হঠাৎ করে সুড়ঙ্গে ধস নামায় ভিতরেই আটকে পড়েন ওই শ্রমিকেরা। তারপর ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও আলো দেখতে পাননি তাঁরা। অন্ধকারাচ্ছন্ন টানেলের মধ্যে কোনওক্রমে শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে তাঁদের। টানেলের বাইরে নিদ্রাহীন পরিবার প্রিয়জনের ফিরে আসার অপেক্ষায়।