অগ্নিগর্ভ হরিয়ানা, ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ নুহ-তে  

নুহ(হরিয়ানা), ২৯ আগস্ট – আগামী ২৮ অগস্ট ‘ব্রিজ মণ্ডল জল অভিষেক’ যাত্রার কর্মসূচি পালনে অনড় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল। প্রশাসন অনুমতি দেয় নি। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নুহ জেলায় আগামী দু’দিনের জন্য মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রেখেছে রাজ্য সরকার। দু-পক্ষের এই অনমনীয় অবস্থানে হরিয়ানার নুহ’তে থমথমে পরিস্থিতি। বন্ধ ব্যাঙ্ক, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গোটা জেলা জুড়ে আগে থেকেই জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

‘ব্রিজ মণ্ডল জল অভিষেক’ যাত্রার কর্মসূচি পালনে বিশ্বহিন্দু পরিষদের নেতারা হরিয়ানার ওই জেলায় আগে থেকেই রয়েছেন। পূর্ব ঘোষণামতো সোমবার নুহ’তে জল অভিষেক যাত্রায় অংশ নিতেই বিশ্বহিন্দু পরিষদের নেতারা হরিয়ানার ওই জেলায় জড়ো হন । গত ৩১ জুলাই এই জল অভিষেক যাত্রা ঘিরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে গোটা জেলা জুড়ে। নুহ’র ঘটনার জেরে গুরুগ্রামে এক মসজিদে হামলায় নিহত হন এক ইমাম। নুহ’তে দু’জন পুলিশ কর্মীসহ নিহত হন ছয়জন, আহত হন ৮৮ জন।  আহত হওয়ার পরও সঙ্ঘ পরিবারের দুই শাখা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল জানিয়ে দিয়েছে, গত ৩১ জুলাই যে কর্মসূচি তাঁদের বন্ধ করতে হয়, তা আবার নতুন করে চালু করা হবে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন বলেছেন, ‘‘সময় মেনেই মিছিল হবে। এটা আমাদের অধিকার, সব দিক ভেবেই পরিকল্পনা করেছি আমরা। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ, প্রশাসনের।’’ এবারের যাত্রায় অংশ নিতে নুহ’তে গিয়েছেন বিশ্বহিন্দু পরিষদের সভাপতি অলোক কুমারও। একটু আগে তিনি ঘোষণা করেছেন, আমরা নিষেধাজ্ঞা মানি না। যাত্রা যেখানে আটকে দেবে সেখানেই আমার বসে পড়ব। জল অভিষেক যাত্রা এবার সম্পূর্ণ করা হবেই।

নুহর মন্দিরগুলিতে শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য সোমবারকে বেছে নিয়েছে ভিএইচপি। কিন্তু হরিয়ানার বিজেপি সরকার জল অভিষেক যাত্রার অনুমতি দেয়নি। নুহ জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। জেলায় প্রবেশের সব রাস্তায় গাড়িতে তল্লাশি চলছে । এমনিতেই রাস্তায় স্থানীয় যানবাহন প্রায় শূন্য।  পুলিশ মন্দির, মসজিদ অঞ্চলে বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে।  আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য এই জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার কথা জানিয়েছে হরিয়ানার বিজেপি সরকার। প্রশাসনের আশঙ্কা, মোবাইল ইন্টারনেট ও  এসএমএস-এর মাধ্যমে ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হতে পারে। যার জেরে ছড়িয়ে পড়তে পারে হিংসা। তবে ব্যাঙ্ক, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির ইন্টারনেট পরিষেবাকে আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।


কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা বলেছেন, যাত্রার নিরাপত্তা, ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।  এর আগে নুহ এবং গুরগাঁওতে যা ঘটেছে তা সরকারের ঢিলেঢালা মনোভাবের জন্যই ঘটেছে। প্রসঙ্গত , গত ৩১ জুলাই ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিয়ানার নূহ, এবং গুরগাঁও।  ধর্মীয় স্থানে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।