রাজধানীর পুরনো ঢাকার চকবাজারের রাসায়নিক থেকে অগ্নিকান্ডের বিভীষিকার রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই অভিজাত এলাকা বনানীর ১৯ নম্বর সড়কে ২২তলা ভবন এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনে এ পর্যন্ত ১৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিক রয়েছেন। আহতদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকের আশঙ্কাজনক। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, নিহতদের সংখ্যা বাড়তে পারে। তারা অভিযোগ করেছেন, এই এলাকায় বিল্ডিং কোড মেনে কেউ ভবন তৈরি করেননি। ফলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের উদ্ধারে তৎপর হতে অসুবিধা হয়েছে। তাছাড়া জল পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকে আগুনের ঘটনা মনিটর করেন । তিনি আহতদের সুষ্ঠু চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ভবনে আগুন লাগে। প্রাথমিকভাবে বলা হয়, ৮ কিংবা ৯ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়, অত্যন্ত দ্রুত উপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে আর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো ভবন। দমকল বাহিনী, সেনা,নৌ ও বিমানবাহিনীর চেষ্টায় বিকেল সাড়ে ৪টের দিকে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরোপুরি আয়ত্তে আসে সন্ধ্যে ৭টার দিকে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। উদ্ধারে ব্যবহৃত হয় ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ল্যাডার। হেলিকপ্টার থেকে ভবনের ওপর বালি ছোঁড়া হয়। আগুন আয়ত্তে আসার পর দমকল বাহিনী এবং সেনা ও পুলিশ বাহিনী ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। রাত ৮টা নাগাদ এই খবর পাঠানোর সময় পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলছিল। লাশ ও আহতের সংখ্যাও বাড়ছিল।
পুরো ভবনটি কাচে ঘেরা। মূলত এটি বাণিজ্যিক ভবন। এখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজার মানুষ কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস, কেউ কেউ আগুন লাগার আগে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আগুন লাগার পর অনেকে কাচ ভেঙ্গে লাফিয়ে পড়ে আহত হন গুরুতরভাবে। ভবনের অনেকে ছাদে গিয়ে ওঠে। তাদের হেলিকপ্টারে এবং ল্যাডারের সাহায্যে উদ্ধার করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছিল।