বেঙ্গালুরু, ৯ জুন– তিনি শুধু দেশের মিতব্যয়ী অর্থমন্ত্রী নন বাড়িরও অর্থমন্ত্রী। তাও একদম কানাকড়িও বাজে খরচ না করার অর্থমন্ত্রী। দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন যেভাবে মেয়ের দিলেন তাতেই প্রমাণিত তিনি সত্যিই যোগ্য অর্থমন্ত্রী। তবে এক নিকট আত্মীয় বিয়ের সামান্য ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট না করলে জানার উপায় ছিল না এই বিয়ের খবর। নির্মলা শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়েছিলেন, ক’দিন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যস্ত থাকবেন। আর জানতেন অর্থ দফতরের সচিবেরা।
বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর বাড়িতে মেয়ে পরকলা বাগময়ীর বিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। নিজে সারাক্ষণ বিয়ের মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। ছিলেন পরিবারের সদস্য, নিকট আত্মীয় আর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নেতা-মন্ত্রী, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, ভিভিআইপি বলতে যাদের বোঝায় তেমন কারও নিমন্ত্রণ ছিল না। পরে দিল্লিতে কোনও রিসেপশনের ব্যবস্থা হলে আলাদা কথা। ঘনিষ্ঠরা বলেন, ব্যক্তিগত জীবনেও বরাবর এমনই নির্মলা। খরচখরচার ব্যাপারে খুবই সতর্ক। অত্যন্ত মিতব্যয়ী। সরকারি টাকা খরচেও উপুরহস্ত হন না সহজে। মেয়ের বিয়েও বাদ গেল না।
নির্মলার জামাই অর্থাৎ পরকলার স্বামী প্রতীক দোশী গুজরাতের বাসিন্দা। সিঙ্গাপুর থেকে ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি অর্জনের পর গুজরাত সরকারের চাকরিতে যোগ দেন। পোস্টিং হয় মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে। মুখ্যমন্ত্রী তখন নরেন্দ্র মোদি । অল্পদিনেই মোদির কাছের অফিসার হয়ে ওঠেন প্রতীক। ২০১৪-তে মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গুজরাত সিএমও অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অনেক অফিসারকেই দিল্লি নিয়ে আসেন। সেই তালিকায় ছিলেন প্রতীক। ২০১৯-এর ভোটের পর তিনি যুগ্ম সচিবের পদমর্যাদা পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রতীকের কাজ হল জন প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করে মোদিকে ফলাফল জানানো। অনেকেই তাই প্রতীককে মোদির চোখ-কান বলে থাকেন।
নির্মলার মেয়ে পরকলা ইংরিজিতে এমএ। এছাড়া তিনি আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতেও মাস্টার্স করেছেন। এখন একটি প্রকাশনা সংস্থায় লেখালেখি করেন। প্রতীকের সঙ্গে যোগাযোগ, বন্ধুত্ব লেখালেখির সুবাদেই।
নির্মলার জন্ম, বেড়ে ওঠা তামিলনাড়ুতে হলেও তিনি পাকাপাকিভাবে থাকেন বেঙ্গালুরুর জয়ানগরে। সেই বাড়িতে অত্যন্ত সাদামাটা আয়োজন ছিল বিয়ের। স্থানীয় একটি মঠের ব্রাহ্মণদের ডাকা হয়েছিল। তাঁরা পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দেন। অর্থমন্ত্রী হিসাবে নির্মলা অত্যন্ত হিসাবি বলে পরিচিত। সরকারি অর্থ বরাদ্দের আগে যেমন খরচের সুফল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেন, তেমনই অর্থমন্ত্রীর অফিসের খরচখরচাতেও তিনি অত্যন্ত সতর্ক। আড়ম্বর মোটেও পছন্দ নয় তাঁর।