পুরী , ৩ মে – পুরীতে বেড়াতে গিয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। সমুদ্রে স্নান করতে নেমে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে গেলেন বাবা ও ছেলেসহ তিনজন । কিছুক্ষণ পর উদ্ধার হল বাবা ও ছেলের নিথর দেহ। তাঁরা হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা। তাঁদের আর এক আত্মীয়কে নুলিয়ারা উদ্ধার করলেও তাঁর অবস্থা গুরুতর। বুধবার সকালে স্বর্গদ্বার এলাকায় এই ঘটনা ঘটার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বাবা ও ছেলের মৃত্যুর খবরে শিবপুরের আচার্যপাড়া লেনে শোকের ছায়া নেমে আসে ।
পুরী প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মৃতদের নাম রঞ্জন দাস, বয়স ৫২ ও তাঁর ছেলে ঋষভ দাস, বয়স ১৬, এঁরা বুধবার সকালে সমুদ্রস্নানে নামেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রঞ্জন দাসের ভাগনে সায়ন মাইতি। তিনিও এঁদের সঙ্গে তলিয়ে যান। তবে নুলিয়ারা তাঁকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। পুরী জেলা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
জানা গেছে, হাওড়া শিবপুর থানার অন্তর্গত ১ নম্বর আচার্য পাড়া লেনের দাস পরিবার গত ১ মে পুরীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। তাঁরা মোট পাঁচ জন সদস্য ছিলেন। পুরী বেড়াতে যান রঞ্জন দাস, তাঁর স্ত্রী, ছেলে, ভাগনে এবং তাঁর মা। মঙ্গলবার রাতে তাঁরা পুরী পৌঁছন। বুধবার দুপুরে স্বর্গদ্বারে ১৩ নম্বর সেক্টরে স্নান করতে নামেন । হঠাৎ করেই ঢেউয়ের তোড়ে তলিয়ে যেতে শুরু করেন রঞ্জন দাস, তাঁর ছেলে ঋষভ এবং ভাগনে সায়ন। ঘটনাটি দেখতে পান স্থানীয় এক নুলিয়া। তিনি তাঁদের উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু সায়নকে উদ্ধার করলেও বাকি ২ জনের হদিশ তাঁর একার পক্ষে পাওয়া সম্ভব হয়নি। বেশ কিছুক্ষণ পর সমুদ্রে তল্লাশি চালিয়ে বাবা ও ছেলের দেহ উদ্ধার করেন নুলিয়ারা। জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, সায়ন মাইতি এখনও পুরী জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
সমুদ্রে স্নান করতে নেমে কী ভাবে তাঁরা তলিয়ে গেলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঢেউয়ের টান সামলাতে না পেরেই তাঁরা তলিয়ে গেলেন, নাকি তাঁরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে, এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য পর্যটকদের মধ্যে। সমুদ্রের ধারে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রঞ্জনবাবুর স্ত্রী ও বৃদ্ধা মা পুরীতেই রয়েছেন। তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আত্মীয়রা পুরীর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।