শিমলার মন্দির ভেঙে ফের মৃত ১১, বিপর্যস্ত হিমাচলে শেষ ৮১ 

শিমলা, ১৮ আগস্ট– সপরিবার শিবমন্দিরে পুজো দিতে এসেই শেষ হয়ে গেল একই পরিবারের তিন প্রজন্ম । সেই মন্দিরেই চাপা পড়ে মৃত হল শিবম নাম এক ব্যক্তির গোটা পরিবারের। সিমলার সামার হিলের শিব বাওয়ারি মন্দিরের সামনে এখনও মাথা খুঁড়ে চলেছেন পবনের ভাই বিনোদ। জানিয়েছেন, দাদার পরিবারের পাঁচ সদস্যের দেহ উদ্ধার করা গেলেও এখনও দু’জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। আশঙ্কা, বেঁচে নেই কেউই। কিন্ত দেহটুকু যেন পাওয়া যায়, সেই আশাতেই প্রার্থনা।

স্ত্রী, পু্ত্র, নাতি, নাতনি, নাতির ছেলেমেয়ে– সবাইকে নিয়ে মোট ৭ জন মিলে সোমবার ওই মন্দিরে এসেছিলেন পবন ।

তাঁরা সপরিবার পুজো দিচ্ছিলেন ভিতরে। বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। কিন্তু ভিতরে যে আরও বড় বিপর্যয় হতে চলেছে, কেউ ভাবতেও পারেননি। মন্দিরে পুজো করার সময়েই মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মাটির নীচে ধসে যায় মন্দির! গুঁড়িয়ে যায় দেওয়ার, ছাদ। সেই ধ্বংসস্তূপেই চাপা পড়ে যান পবন ও তাঁর পরিবারের পরবর্তী তিন প্রজন্ম।


সেদিন পবনদের পরিবারের সঙ্গে মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর ছোট বোনেরও। তিনি যাননি, প্রাণে বেঁচে গেছেন। কান্নায় ভেঙে পড়ে বলছিলেন, ‘এই যন্ত্রণা আমি সারাজীবন বয়ে বেড়াব। আমাদের গোটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। আমি দাদা এবং বাকিদের দেহ শেষ বারের মতো দেখতে চাই। আমার কপালে মৃত্যু লেখা ছিল না, তাই আমি বেঁচে গেলাম।’

পবনের পরিবারের তিন প্রজন্ম তো বটেই ওই মন্দিরে সেদিন চাপা পড়ে মারা গেছেন আরও অনেকে। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ১১ মৃতদেহ। প্রিয়জনের খোঁজে বহু আত্মীয়-পরিজন দাঁড়িয়ে মন্দিরের বাইরে। স্বজনহারাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস।

একনাগাড়ে বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো উত্তর ভারতের পাহাড়ি রাজ্যগুলি। লাগাতার বর্ষণে একাধিক এলাকায় নামছে ধস। ভেঙে পড়ছে বড় বড় বাড়ি। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার অবধি সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮১ জন।