হায়দরাবাদ, ১৭ সেপ্টেম্বর– ১৯৪৮ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করেছিলেন হায়দরাবাদের তৎকালীন নিজাম। ভারতীয় সেনার তৎপরতায় স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় নিজামের শহর। পরে স্বাধীন ভারতের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলে কাছে আত্মসমর্পণের দলিল পেশ করেন নিজাম মীর ওসমান আলি খান।
এ বছর সেই বিজয়ের ৭৫ বছর পূর্তির বিশেষ তাৎপর্য তো ছিলই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১৩ মাস পর তেলেঙ্গানা বিধানসভার নির্বাচন।
এদিন হায়দরাবাদে কেন্দ্রীয় সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ । ভাষণে তিনি বলেন, ‘ভারত স্বাধীন হয় ১৯৪৭-এর ১৫ অগাস্ট। পরের বছর স্বাধীন ভারতের অংশ হয় হায়দরাবাদ। কিন্তু দুর্ভাগ্যের হল, হায়দরাবাদে আজও নিজামের শাসন চলছে।’ এই সঙ্গেই বলেন, ‘তবে আমি কথা দিচ্ছি, আর মাত্র তেরো মাস আপনাদের নিজামের অধীনে থাকতে হবে। তেরো মাস পর নিজামের শাসন থেকে মুক্তি মিলবেই।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের লক্ষ্য হলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও ও হায়দরাবাদের সাংসদ এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি। তেলেঙ্গানার শাসক দল টিআরএস এবং বিজেপি ও কংগ্রেস সর্ব শক্তি দিয়ে চেষ্টা করেও ওয়েইসিকে হারাতে পারেন। উল্টে তিন দলই বাকিদের দিকে আঙুল তোলে ওয়েইসির সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া আছে বলে।
অন্যদিকে, ২০১৪-তে তেলেঙ্গানা রাজ্যের জন্মের পর থেকেই সেখানে কেসিআরের দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির শাসন চলছে। কেসিআরের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি। সঙ্গে আছে পরিবারতন্ত্র। কেসিআর পুত্রের দল ও সরকারে দাপটকে টিআরএসের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে নিজামের শাসনের দৃষ্টান্ত টেনে থাকে তারা।
বিজেপি মনে করছে, সেখানে পরিস্থিতি ২০২১-এ বাংলার থেকেও তুলনায় অনুকূল। টিআরএস এবং কংগ্রেস ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দল সেখানে ভাল অবস্থায় আছে। এবার তেলেঙ্গানা দখলে নিতে তাই সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে তারা। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ব্যাপারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দিন কয়েক পরই তাঁর তেলেঙ্গানা সফরে যাওয়ার কথা।