কলকাতা, ৫ জুন – নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার ‘কালীঘাটের কাকু’র ৪০টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেল ইডি। ইডি সূত্রে খবর, এই সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য মিলবে। এমনকি, এই সমস্ত তথ্য থেকে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র সম্পর্কে ইডি আরও তথ্য পেয়েছে বলে খবর। গত ৩০ মে ইডির হাতে গ্রেফতার হন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র।
তদন্তে অসহযোগিতা, আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির অসামঞ্জস্য-সহ তথ্যে গোপনীয়তার অভিযোগে গ্রেফতার হন কালীঘাটের কাকু । গোপাল দলপতি থেকে শুরু করে তাপস মণ্ডলের মুখে শোনা যায় ‘কালীঘাটের কাকু’ সম্বোধন। কুন্তলের মুখেও শোনা যায় এই নাম। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম কিং পিন সুজয়কৃ্ষ্ণ ভদ্র । তাঁর মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা হয়েছে। আদালতের বাইরে তাপস সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘সুজয়ের কাছে এজেন্টদের তালিকা ও টাকা পৌঁছে যেত।’তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। গত মাসে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার আগেও তিনি জোর গলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তাঁকে জেরা করে জরুরি অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আগেই কালীঘাটের কাকুর মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। সেখানেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাওযা গিয়েছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি দফতরে কর্মরত ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু।
সুজয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে নজর দিয়েছিল নিয়োগ মামলার তদন্তকারী এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। কারণ ইডির কথায়, সুজয়ের সঙ্গে একদিকে যেমন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের যোগ ছিল, তেমনই তৃণমূলের দুই বহিষ্কৃত নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষেরও আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক ছিল। ইডিকে সুজয় নিজেই জানিয়েছিলেন, শান্তনু ব্যবসা শুরু করার সময় তাঁর টাকার দরকার ছিল বলে তাঁর স্ত্রীর সংস্থা থেকে মোটা টাকা দিয়ে সম্পত্তি কিনেছিলেন তিনি। যদিও পরে সেই টাকা বা সম্পত্তি কোনওটিই পাননি। আবার কুন্তলও ইডির কাছে স্বীকার করেছিলেন, ‘কালীঘাটের কাকু’র থেকে বড় অঙ্কের অর্থ সাহায্য নেওয়ার কথা। তবে কুন্তল জানিয়েছিলেন, ওই টাকা তিনি ধার হিসাবে নিয়েছিলেন এবং পরে ফেরত দিয়ে দেন। এই সমস্ত তথ্য জানার পরই সুজয়ের আর্থিক লেনদেনে কড়া নজর দেয় ইডি। ইডি সূত্রে খবর, ‘কালীঘাটের কাকু’র প্যানকার্ড এবং অন্যান্য তথ্যের সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে তারা। তাদের আশা, ওই ৪০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে যুক্ত আরও অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া যাবে।
ই।