দূরদর্শন-আকাশবাণী প্রচার করবে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ এজেন্সির খবর

দিল্লি, ২৭ ফেব্রুয়ারি– দূরদর্শন ও আকাশবাণী অচিরেই এমন একটি সংবাদ সংস্থার খবর প্রচার করবে যেটির রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়ে তীব্র বিতর্ক রয়েছে দেশে। এই দুই সরকারি প্রচার মাধ্যমের পরিচালন সংস্থা প্রসার ভারতীর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে হিন্দুস্থান সমাচার নামে ওই বার্তা সংস্থার বা নিউজ এজেন্সির।

প্রসার ভারতীর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। দীর্ঘদিন প্রসার ভারতীর মুখ্য পরিচালক ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। তাঁর বক্তব্য এটা বিজেপি ও প্রসার ভারতীর মধ্যে বোঝাপড়া। 

বিরোধীদের বক্তব্য হল, হিন্দুস্তান সমাচার গেরুয়া শিবিরের অভিভাবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ভাবধারায় চলে।


প্রসার ভারতীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। তিনিও বলেছেন সরকারি প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে একেবারে সরাসরি শাসকদল ও হিন্দুত্ববাদীদের বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে তৈরি হল এই চুক্তির মধ্য দিয়ে।

সূত্রের খবর, প্রসার ভারতীর সঙ্গে হিন্দুস্তান সমাচারের চুক্তি অনুযায়ী এই সংবাদ সংস্থা প্রতিদিন প্রসার ভারতীকে একশোটির কাছাকাছি খবর সরবরাহ করবে। তার মধ্যে দশটি সর্বভারতীয় খবর এবং বাংলা, হিন্দি, মারাঠি সহ একাধিক আঞ্চলিক ভাষাতেও তারা প্রসার ভারতীকে খবর দেবে। এই চুক্তি বহাল থাকবে ২০২৫ এর ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত।

হিন্দুস্থান সমাচার যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৪৮ সালে। এই নিউজ এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা আরএসএসের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শিবরাম শঙ্কর আপ্তে। পরবর্তীকালে আরএসএসের দ্বিতীয় প্রধান এমএস গোলওয়ালকারও এই সংগঠন পরিচালনায় ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে এই সংবাদ সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

প্রসার ভারতীর সঙ্গে এতদিন পিটিআইয়ের চুক্তি ছিল। কিন্তু সেই চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বলে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির দাবি।

হিন্দুস্তান সমাচারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রসার ভারতী বছরে প্রায় আট কোটি টাকা দেবে ওই সংবাদ সংস্থাকে। চুক্তি বহাল থাকবে ২০২৫ এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

সূত্রের খবর, পিটিআইয়ের সঙ্গে প্রসার ভারতীর বিবাদের সূত্রপাত চিন-ভারত সংঘাত নিয়ে। দিল্লির চিনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে পিটিআই। ভারত সরকারের অভিযোগ ওই সাক্ষাৎকারে ভারতের সার্বভৌমত্ব নিয়ে সংশয় তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া পিটিআইয়ের বেজিং থেকে পাঠানো খবর নিয়েও ভারত সরকারের আপত্তি আছে।