ইসলামাবাদ, ২৮ সেপ্টেম্বর – আর্থিক সমস্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে হজ শুরুর আগে পাকিস্তানকে সতর্ক করল সৌদি আরব। হজ কোটার প্রার্থী বাছাই নিয়ে পাক সরকারকে এই সতর্কবার্তা সৌদি সরকারের। হজযাত্রায় কোটায় আবেদনকারীদের মনোনয়নের বিষয়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। কোনও ভাবেই যাতে ভিখারি কিংবা পকেটমারের মতো ছিঁচকে অপরাধীরা হজের সুযোগ না পান, সে কথা জানানো হয়েছে। সৌদির বিদেশ মন্ত্রকের কর্মকর্তাদের একটি বৈঠকের পরই পাকিস্তানকে সতর্ক করা হয়।
সৌদি আরব সূত্রে খবর, হজ যাত্রার সময় গ্রেফতার হওয়া ভিক্ষুকদের মধ্যে ৯০ শতাংশ পাকিস্তানের। এরা ওমরাহ ভিসায় পাকিস্তান থেকে সৌদি আরবে যায়। হজ যাত্রাযাত্রায় যাতে ভিখারি , পকেটমার, এবং ছিঁচকে অপরাধীদের পাঠানো না হয় তার জন্য পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রককে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। এই অপরাধীদের সাজাও দেওয়া হয়েছে বলে সৌদি আরবের তরফে জানানো হয়েছে। সৌদির বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘ আমাদের কারাগারগুলি আপনাদের বন্দিদের দিয়েই ভর্তি হয়ে গেছে।’ সূত্রের খবর, সৌদি আরব পাকিস্তানের উপর খুবই ক্ষুব্ধ। পাকিস্তানের দুর্বৃত্তরা আরবের ভিসা নিয়ে মক্কা সফরে যায় না, তারা যায় ওমরাহ ভিসায়। তার কারণ,, সৌদি সরকার পাকিস্তানের মানুষকে সেখানে কাজ দিতে চায় না। কারণ তাদের দক্ষ শ্রমিক বলে মনে করে না সৌদি। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশের মানুষদের দক্ষ শ্রমিক বলে মনে করে পাকিস্তান। তাই ছদ্মবেশে পাকিস্তানের শ্রমিকরা সেখানে কাজ পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ সৌদির।
হজে পুণ্যার্থী নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিটি দেশের জন্যই কোটা নির্দিষ্ট করে দেয় সৌদি আরব। কোন দেশ থেকে কত জন মক্কায় আসবেন, তা সৌদিকে আগে থেকে জানাতে হয়। কোটার মাধ্যমে আর্থিক সাহায্যও মেলে। সেই কোটার সুযোগ নিয়ে যাতে ভিখারি কিংবা অপরাধীরা ঢুকে পড়তে না পারে সে বিষয়ে আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি আরব।
হজযাত্রায় সৌদি আরবে প্রতি বছর ভিড় হয় লাগামছাড়া। ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়। এ বছর সৌদি থেকে ১ লক্ষ ৭৯ হাজার মানুষের কোটা পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের কারণে এ বছর ইসলামাবাদ তা ফিরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেশে বিক্ষোভ দেখা দেওয়ায় কিছু শর্তসাপেক্ষ কোটায় হজযাত্রায় সম্মতি দেয় পাক সরকার। এই কোটার সুযোগ নিয়ে পাকিস্তান থেকে সৌদি আরবে পৌঁছে যায় ভিখারি ও পকেটমাররা, যা বরদাস্ত করতে রাজি নয় সৌদি সরকার।