কলকাতা, ২৪ নভেম্বর – বিধানসভা অধিবেশনে কঠোর করা হচ্ছে মন্ত্রীদের নিয়মানুবর্তিতা। নতুন এই নিয়ম লাগু করা হল শুক্রবার থেকে। বিধায়কদের হাজিরার ক্ষেত্রেও কড়া নজর রাখা হবে। শুক্রবার তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী পরিষদীয় দলের বৈঠকে জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিনি এই দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। সুব্রত এদিন পরিষদীয় দলের বৈঠকে বলেন, ‘‘আমাকে প্রতিদিন বিধায়কদের উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পাঠাতে বলেছেন। সেই মতো প্রতিদিন আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই হিসাব পাঠিয়ে দেব। যে কোনওদিন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় এসে হাজির হতে পারেন। সেদিন যাঁরা উপস্থিত থাকবেন না, তাঁদের নিজেদের জবাব নিজেদেরই দিতে হবে।”
এদিন মন্ত্রী-বিধায়কদের উদ্দেশে সুব্রত অধিবেশন পর্বের আচরণবিধি সম্পর্কেও স্পষ্ট করে জানান। শুধু হাজিরা নয়, অধিবেশনে উপস্থিত থাকাও যে বাধ্যতামূলক, সে কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘ বিধানসভায় এসে বাইরে ঘুরে বেড়ালাম, অধিবেশনে হাজিরা দিলাম না, সেসব চলবে না। বিধানসভায় হাজির হয়ে অধিবেশনে যোগ দিতে হবে। প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে বিধায়কদের তৈরি হয়ে আসতে হবে। প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে সব বিষয় সঠিক জেনে প্রশ্ন করতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো শুরুর দিনই মন্ত্রীদের হাজিরা খাতায় সই করতে হয়েছে। শুক্রবার পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে রাখা ছিল মন্ত্রীদের হাজিরা খাতা। কে, কখন বিধানসভা অধিবেশনে প্রবেশ করছেন, সেই সময় উল্লেখ করে সই করতে হয়েছে। শুধু প্রবেশের সময় নয়। মন্ত্রীরা কখন বার হচ্ছেন সেই সময় উল্লেখ করে ফের এক বার সই করতে হবে। অর্থাৎ যা থেকে বোঝা যাবে, কোন মন্ত্রী কতক্ষণ বিধানসভায় ছিলেন।
নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কি স্কুলে পড়ি নাকি! পার্টি বলেছে, তাই করলাম। কিন্তু এটার সঙ্গে আমি সহমত নই।’ফিরহাদের পাশেই ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, “১১ বছর ধরে বিধানসভায় রয়েছি। এক দিনও কামাই করিনি।’’
পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাঁচ জনের একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি হয়েছে। যার চেয়ারম্যান শোভনদেব। আর রয়েছেন ফিরহাদ, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং বিরবাহা হাঁসদা। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্য হয়েও ববি যে ভাবে শুক্রবার সই নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। কেন এই কমিটি গঠন করা হয়েছে শোভনদেব তাও ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘সকাল ১১টায় অধিবেশন শুরু হলে দেখা যাচ্ছে অনেক বিধায়ক নেই। এটা ঠিক নয়। মানুষ তো তাঁদের নির্বাচিত করেছে বিধানসভায় কথা বলার জন্য।’’দলের বিশেষ অধিবেশন থেকে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। শুক্রবার জানা গেল, বিধায়কদের ‘দায়িত্ব’ পেয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত।