ভোপাল,২৮ নভেম্বর– শুধু নরেন্দ্র মোদি নন তাঁর মুখে বিজেপির নামও অস্পৃশ্য। গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণে আরএসএস-কে নিশানা করছেন বটে, কিন্তু বিজেপির নামও নিচ্ছেন কদাচিৎ। ভারত জোড়ো যাত্রায় বেরিয়ে প্রথম থেকেই খুব সতর্পনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম এড়িয়ে যাচ্ছেন রাহুল গান্ধি ।যাত্রার মূল লক্ষ্য হিসাবে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু মোদির গড় খ্যাত গুজরাত বিধানসভার ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রং বদল রাহুলের। এবার মোদি সরকারের সমালোচনায় মুখ খুললেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি ।
রাহুল জিএসটি এবং নোটবন্দিকে হাতিয়ার করে মোদিকে বিঁধেছেন। তিনি বলেন, দেশের এতটা ক্ষতি চিনা সেনার আক্রমণেও হয়নি যা মোদির জিএসটি ও নোটবন্দিতে হয়েছে। রাহুলের মতে, দুটিই বিপর্যয়মূলক নীতি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী, ছোট উদ্যোক্তা এবং কৃষকদের হাতে নগদের জোগান কমে গিয়েছে, যারা দেশে কর্মসংস্থানের আসল কারিগর। কংগ্রেস নেতার কথায়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং কৃষকদের পুনরুজ্জীবিত না করা গেলে, ভারতে বেকারি ঘুঁচবে না।
ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে পৌঁছে রাহুল চিন প্রসঙ্গ টেনে ঘরোনা রাজনীতির ইস্যু ধরে নাম না করে মোদিকে নিশানা করেছেন। ইন্দোরের রাজওয়াদা প্রাসাদ লাগোয়া ময়দানের সমাবেশে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেন। বলেন, ‘বর্ধিত মূল্যের অর্থ কোথায় যাচ্ছে? এই টাকা মানি ট্রান্সফার নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দু’জন ধনকুবেরের পকেটে যাচ্ছে।’ কংগ্রেস নেতার আরও অভিযোগ, এই টাকাই খরচ করা হচ্ছে বিধায়ক কেনাবেচায়।
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের জনসভায় রাহুল চিনের প্রসঙ্গ তোলেন। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, গালোয়ানে চিনা সেনা ভারতের ভূখণ্ড দখল করে বসে আছে। ভারতীয় সেনা চাইলেই তাদের ভাগিয়ে দিতে পারে। কিন্তু সরকার সবুজ সংকেত দিচ্ছে না। এই ব্যাপারে বিরোধীদের মধ্যে রাহুল গান্ধী সবচেয়ে সরব। বিগত কয়েক মাস যাবৎ এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন তিনি।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাহুলের এই কৌশলের কারণ, কংগ্রেস জমানায় চিনের সঙ্গে যুদ্ধে ভারতের পরাজয়কে গেরুয়াবাদীরা সুযোগ পেলেই ইস্যু করে থাকে। স্বাধীনতা প্রাপ্তির কয়েক বছরের মধ্যে হওয়া সেই যুদ্ধে ভারতের অর্থনীতি আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।পাল্টা রাহুল তাই দেখাতে চান, পুরোদস্তুর যুদ্ধ দূরে থাক, সীমান্ত সংঘাতেও সেনাদের ফ্রি হ্যান্ড দিচ্ছে না মোদী সরকার। কংগ্রেস যা দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জনের শামিল বলছে।