কলকাতা, ২৪ মে – দিল্লির আদালতে ফের খারিজ হয়ে গেল বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের জামিনের আর্জি। ফলে গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে আপাতত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে। বুধবার রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে অনুব্রতের মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে তৃণমূল নেতার শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী মুদিত জৈন। কিন্তু মামলার শুনানির পর তাঁর জামিনের আরজি খারিজ করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, তিহাড় জেলের কাছ থেকে বারবার চাওয়া সত্ত্বেও অনুব্রতর মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়া হয়নি বলে এদিন দাবি করেছেন অনুব্রতর আইনজীবী। জামিন মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ জুলাই হবে বলে আদালত জানিয়েছে। অনুব্রতকে ১২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালত।
অনুব্রত মন্ডলের আইনজীবী মুদিত জৈন বলেন, ‘‘বুধবার শুনানির সময় তৃণমূল নেতার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁরা আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন। ১০ জুলাই সেই জামিন মামলার শুনানির দিন ঠিক হয়েছে। আপাতত অনুব্রতকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’এর আগে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে তিহাড় থেকে আসানসোল জেলে ফেরত যাওয়ার আবেদন করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল । গত ৪ মে অনুব্রতের সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক রঘুবীর সিংহ।
গত মার্চ মাস থেকে তিহাড় জেলে রয়েছেন গরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুব্রত। ৭ নম্বর সেলে রয়েছেন তিনি। ৬ নম্বর সেলে রয়েছেন তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও। সম্প্রতি জেলের মধ্যে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানা যায়। এরপরই আদালতে জামিনের আবেদন জানান তিনি।
সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলের মেডিক্যাল রিপোর্টকেই হাতিয়ার করতে চেয়েছিলেন তাঁর আইনজীবীরা। তবে সেই রিপোর্ট পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। অনুব্রতর আইনজীবী জানান, তিহাড় জেলে অনুব্রতর যে চিকিৎসা হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত নথিপত্র জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একাধিকবার চাওয়া হয়েছিল। কারণ অনুব্রতর জামিনের আবেদনের ক্ষেত্রে ওই মেডিক্যাল রিপোর্টগুলি খুবই প্রয়োজন ছিল। রিপোর্ট যে পাওয়া যাচ্ছে না, সে কথাও আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়। কিন্তু তা শোনা হয়নি। তাঁর আইনজীবী জানান, এই বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে শীঘ্রই দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন অনুব্রত।
উল্লেখ্য, তিহাড়ে যাওয়ার পর থেকেই বারবার শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন অনুব্রত। তিহাড়ের জেল হাসপাতালে চিকিৎসাও হয়েছে তাঁর। অন্যদিকে, কয়েকদিন আগে আসানসোল আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেওয়ার সময়ও ‘শরীর ঠিক নেই’ বলে জানিয়েছিলেন অনুব্রত।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত, অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা, অনুব্রতের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি – তিন জনই এখন দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন। গত ২৬ এপ্রিল ইডির হাতে গ্রেফতার হন সুকন্যা।