কংগ্রেসে ৫০ বছরে প্রথম, প্রিয় পর দীপা স্ত্রী

দিল্লি, ২১ আগস্ট– দীর্ঘ ১৫০ বছরের কংগ্রেসের ইতিহাসে এই উদাহরণ বিরলতম। প্রিয় রঞ্জন দাশমুন্সির পর সেই পদেই তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। এই ইতিহাসের প্রথম পর্ব ঘটেছিল ১৯৭২। কলকাতায় কংগ্রেসের অধিবেশনে ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী তথা যুব কংগ্রেসের সভাপতি প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়েছিলেন তরুণ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। ।

সে ঘটনার ৫১ বছর পর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে সদস্য হলেন প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি । সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকও হলেন দীপা।

কংগ্রেসের দেড়শ বছরের ইতিহাসে এ ঘটনা এক প্রকার বিরলতম বইকি। যদিও গান্ধি পরিবার এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী। রাজীব গান্ধি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সনিয়া গান্ধি কংগ্রেসের সভানেত্রী হয়েছেন। কিন্তু গান্ধি পরিবারের বাইরে অন্য কোনও পরিবার থেকে স্বামী ও স্ত্রী দু’জনেই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হয়েছেন কিনা দলের কোনও নেতাই স্মরণ করে বলতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, বাংলা থেকে দীপা দ্বিতীয় কোনও মহিলা নেত্রী যিনি কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটির সদস্য হলেন। সম্ভবত ছয়ের দশকে বাংলা থেকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হয়েছিলেন পুরবী মুখোপাধ্যায়।


রবিবার সর্বভারতীয় কংগ্রেস নতুন ওয়ার্কিং কমিটি ঘোষণার পর কিছুটা আবেগঘন হয়ে পড়েন দীপা। তেলঙ্গনায় বিধানসভা ভোট আসন্ন। তার আগে দীপাকে সিনিয়র অবজার্ভার করে সেখানে পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।

জানিয়ে রাখি, ২০০৮ সাল প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি তখন কেন্দ্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী। সেই সঙ্গে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীও। ১২ অক্টোবর কলকাতায় বড় রকমের ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল তাঁর । সেই রোগ শয্যার পর রাজনীতিতে আর ফিরে আসতে পারেননি প্রিয়। অথচ সেই সময়টাতেই কংগ্রেস ও কেন্দ্রে সরকারে তাঁর জন্য দরজা আরও প্রশস্ত হতে শুরু করেছিল। পরের বছর কংগ্রেস আরও বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। গান্ধি পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতারাই স্বীকার করেন, প্রিয়বাবু সুস্থ থাকলে ইউপিএ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে আরও বড় দায়িত্ব পেতেন মনমোহন মন্ত্রিসভায়।

প্রিয়রঞ্জন অসুস্থ হওয়ায় ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জে প্রার্থী হন দীপা। জিতেও যান তিনি। জাতীয় রাজনীতিতে সেই তাঁর হাতেখড়ি। প্রিয়রঞ্জন তাঁর ইনিংস শুরু করেছিলেন ছাত্র রাজনীতিতে থেকে। দীপা বরং অভিনয় জীবনের পর মাঝবয়সে এসে রাজনীতিতে নামেন। সেই তুলনায় জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অগ্রগতি চোখে পড়ার মতই।