দিল্লি: মৃত্যুকালীন জবানবন্দি চূড়ান্ত নয়, একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত জানায়, মৃত্যুকালীন জবানবন্দিই অপরাধ সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত নয়। বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি কে মিশ্রকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, ডাইয়িং ডিক্লারেশন বা মৃত্যুকালীন জবানবন্দির সঙ্গে সমর্থনযোগ্য প্রমাণ না থাকলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এক ব্যক্তির নিজের সন্তান এবং দুই ভাইকে পুড়িয়ে মারার ব্যাপারে রায় দিতে গিয়ে একথা বলেন বিচারপতিরা।
সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি যখন নেওয়া হয়, তখন তা সত্যি ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুকালীন জবানবন্দি সঠিক কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি দেখা যায়, সামান্যতম সংশয়েরও জায়গা রয়েছে বা পরবর্তী সময়ে দেখা যাচ্ছে ওই জবানবন্দি সঠিক ছিল না, তাহলে তাকে শুধু একটি সাক্ষ্য হিসেবেই ধরা হয়, কিন্তু অপরাধ সাব্যস্ত করার চূড়ান্ত ভিত্তি হিসেবে নয়।’ যদিও সুপ্রিম কোর্ট এর আগেও একাধিকবার বলেছিল, মৃত্যুকালীন জবানবন্দিই চূড়ান্ত নয়।
যে মামলার শুনানি হয়, সেখানে অপরাধী তার সন্তান ও দুই ভাইকে পুড়িয়ে মারে। তাঁদের মধ্যে একজন মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে এ কথা জানান। তার ভিত্তিতেই তদন্ত হয় ও অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই রায় বহাল রাখে। এরপর অপরাধী শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় মৃত্যুদণ্ড রোধ করার আর্জি নিয়ে। সেই মামলাতেই শীর্ষ আদালত একথা বলে। শীর্ষ আদালত বলে, তদন্তে তারা সন্তুষ্ট নয়। কারণ সন্দেহাতীত ভাবে অপরাধ প্রমাণ করা যায়নি। অপরাধীর আইনজীবীর যুক্তি ছিল, ‘৮০ শতাংশ বার্ন ইনজুরি নিয়ে যখন একজন মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দেন, তখন তাঁর মানসিক স্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।’
ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের ৩২ নং ধারার (১) উপধারায় মৃত্যুকালীন জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। সাধারণভাবে ব্যক্তির দেওয়া মৌখিক সাক্ষ্য সেই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি সেক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যতিক্রম।