ভদোদারা, ১১ মার্চ — নেশা থেকে মুক্তি পেতে সাধারণত আজকাল নেশামুক্ত কেন্দ্র একটা ভরসার জায়গা। কিন্তু সেই ভরসার জায়গায় যদি নেশার স্থানে জীবন থেকেই মুক্তি দিয়ে দেয় তাও এইরকম ভয়ঙ্কর অত্যাচারের পর তাহলে কাউকে সেখানে পাঠানোর আগে একশো বার ভাববেন আপনজনরা। ঘটনাটি গুজরাটের পাটান এলাকার এক নেশামুক্তি কেন্দ্রের। সেখানে ৯০ মিনিট ধরে নৃশংস অত্যাচারের পর নেশাসক্ত যুবককে পিটিয়ে মারার অভিয়োগ উঠেছে কেন্দ্রের ম্য়ানেজার-সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে । যদিও যুবকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে শেষকৃত্য সেরে ফেলেছিল অভিযুক্তরা। পরে অবশ্য পুলিশ খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করতেই প্রকৃত সত্য উঠে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নেশামুক্তি কেন্দ্রে নিজের ক্ষমতা বোঝাতেই এই ঘটনা ঘটায় সন্দীপ। যাতে অন্যান্য নেশাসক্তরা বেচাল না করে। আর নিজের রোয়াব বোঝাতে যুবকের প্রাণ কেড়ে নিল অভিযুক্তরা। তাদের সকলকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুরাটের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত মেহসানা জেলার নেশামুক্তি কেন্দ্রে গত ছ’মাস ধরে ভরতি ছিলেন হার্দিক সুথার নামে এক যুবক। গত মাসে তাঁর মৃত্যু হয়। শেষকৃত্যও হয়ে গিয়েছিল। হার্দিকের পরিবারকের ওই কেন্দ্রের ম্যানেজার সন্দীপ প্যাটেল জানিয়েছিলেন, আচমকা রক্তচাপ কমে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। দিন দুয়েক আগে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারে পাটান এলাকার বি ডিভিশনের পুলিশ। তাদের সন্দেহ হওয়ায় নেশামুক্তি কেন্দ্রে এসে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করতেই আসল তথ্য় উঠে আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শৌচাগারের ঢুকে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল হার্দিক। বিষয়টি জানতে পারে সন্দীপ-সহ সাত-আটজন শৌচাগারে ঢুকে তাঁর হাত-পা কষে বেঁধে দেয়। এরপর চলে অত্যাচার। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে প্লাস্টিকের মোটা পাইপ দিয়ে চলে মারধর। এরপর লাইটারের আগুনে পাইপের একাংশ গলিয়ে ফেলা হয়। আর সেই গরম তরল প্লাস্টিক ঢেলে দেওয়া হয়েছিল হার্দিকের গোপনাঙ্গে। এমনকী, তাঁর গোপনাঙ্গের লোম পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর নিজেদের কৃতকর্ম ঢাকতে সন্দীপের গাড়িতে করে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হার্দিককে। সারা রাত গাড়িতেই পড়েছিল তাঁর দেহ। পরের দিন যুবকের আত্মীয়দের মৃত্যুর খবর জানানো হয়।