মুম্বাই,২২ ডিসেম্বর– শুধু আজ নয় আজ থেকে ৪০ বছর পরও যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়, বলুন তো শোলে কেমন সিনেমা? আমি নিশ্চিত তাঁর উত্তর হবে, ‘সর্বকালের সর্বসেরা ছবি।’ আর যদি জিজ্ঞেস করা হয় এই ছবিতে কার চরিত্র সব থেকে বেশি বিখ্যাত ? জবাব হবে গব্বর সিং-এর। সত্যি কথা বলতে গব্বর সিং না থাকলে এই সিনেমাটি এই মাত্রায় পৌঁছতেই না। গব্বর মানে আমজাদ খান এই সিনেমাটিতে অভিনয় করার পর গোটা বিশ্বে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জেনে অবাক হবেন এই চরিত্রটির জন্য আমজাদ নয় নির্দেশকের প্রথম পছন্দ ছিলেন ড্যানি।
ঠিকই শুনেছেন। ড্যানিকে প্রথম এই চরিত্রটি অফার করা হয়। কিন্তু ড্যানি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
সেই প্রত্যাখ্যানের আফসোস অবশ্য দানির সারা জীবন থাকবে বলেই একসময় জানিয়েছিলেন তিনি। কারণ সিনেমাটি না করার সময়ই তিনি জানতেন এই চরিত্র সিনেমার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু এর প্রস্তাব পাওয়ার আগেই ফিরোজ খানের ‘ধর্মাত্মা’-র জন্য সই করে ফেলেছিলেন, এবং ফিরোজ খানের সঙ্গে পাকাপাকি কথা হয়ে গিয়েছিল। ড্যানি জানতেন যে ‘গব্বর সিং’ একটি অসাধারণ চরিত্র, কিন্তু নৈতিক দিক থেকে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
আক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে ড্যানি বলেন, ‘‘আমার লেশমাত্র আক্ষেপ নেই যে আমি গব্বর সিং-এর চরিত্র করতে পারিনি। কারণ ‘শোলে’-তে কাজ করলে মানুষ আমজাদ খানের সেই কালজয়ী কাজ প্রত্যক্ষ করতে পারতেন না।’’
চিরকালই ড্যানি ডেনজংগপা বাছাই ছবিতে কাজ করেছেন। বছরে তিনটের বেশি ছবিতে কাজ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। পরবর্তীকালে তিনি জানিয়েছিলেন, মুম্বইয়ের গরমের জন্যও কিছু ছবি করতে রাজি হননি।
ড্যানি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। পুণের আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের পরীক্ষাতে পাশও করেছিলেন। কিন্তু পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে পড়ার জন্য সেখান থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। ড্যানি ডেনজংগপার মূল নাম শেরিং ফিনটসো ডেনজংগপা। কিন্তু তাঁর বন্ধু এবং সহপাঠী জয়া বচ্চনের উপদেশে তিনি লোকের উচ্চারণের সুবিধার্থে ‘ড্যানি’ নাম গ্রহণ করেন।
‘বন্দিশ’, ‘অগ্নিপথ’, ’১৬ ডিসেম্বর’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখেছেন ড্যানি। ২০০৩ সালে ভারতীয় সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে।