দিল্লি , ৯ নভেম্বর – বিচারপতিদের সমালোচনা করার অর্থ আদালত অবমাননা করা নয়। একথা স্পষ্ট করে দিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আদালত অবমাননার আইন বিচারকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য নয়। বরং কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের রায় মানতে না চাইলে তাঁদের শাস্তির জন্য। সাক্ষাৎকারে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, মর্যাদা রক্ষায় দায় আছে ব্যক্তি বিচারপতিরও। আদালতের রায়, পর্যবেক্ষণ নিয়ে জনমানসে আপত্তি থাকতেই পারে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় স্পষ্ট জানালেন, কোনও বিচারপতির সমালোচনা কখনওই আদালত অবমাননা বলে গণ্য হবে না। প্রযোজ্য হবে না আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাও। ওই সাক্ষাৎকারে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আদালত অবমাননার আইন কোনওভাবেই বিচারকদের সমালোচনা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য নয়। বরং, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিচারে বাধা দিলে বা আদালতের রায় মানতে অস্বীকার করলে তা অবমাননা বলে ধরা যেতে পারে। কিন্তু রায়ের বা বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করলে বিচারপতিরা অবমাননার ধারায় রক্ষাকবচ পাবেন না।
বিচারপতি হিসাবে বুধবার ২৩ বছর পূর্ণ করেছেন চন্দ্রচূড়। প্রধান বিচারপতি হিসাবেও বুধবার ছিল এক বছর পূর্তি। এই উপলক্ষে বিচার বিভাগে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি।
ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে কারও বক্তব্য আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হতে পারে সে ব্যাপারে জনসাধারণের মধ্যে স্পষ্ট ধারণার অভাব আছে। সেই কারণে প্রধান বিচারপতির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। সাম্প্রতিক অতীতে আদালতের সমালোচনা বেড়ে গিয়েছে। বহু মানুষ সামাজিক মাধ্যমে বিচারপতি এবং বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিচারপতিকেও নিশানা করা হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আবার বিচারপতিকে ‘মহান’ মনে করার প্রবণতাও বাড়ছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সুখ্যাতি কম নয়। আবার তিনি বহুবার রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায় নিয়ে সমালোচনা হয়েছে বা হচ্ছে। অনেকেই বিচারপতিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছেন। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমালোচনাও আদালতের অবমাননা নয়।