এই অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আনেন অসমের কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দাবি করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষকদের জন্য ‘কিষাণ সম্পদ’ প্রকল্পে ভর্তুকির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রী প্রভাব খাটিয়ে নিজের পরিবারের জন্যেও ভর্তুকির বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন।’
গৌরবের ওই অভিযোগের পরেই দুর্নীতির অভিযোগ খারিজ করে হিমন্ত বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী যে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত, সেই সংস্থার কেউই সরকারের থেকে কোনও আর্থিক ভর্তুকি নেননি।’’ এর পরেই গৌরব কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটের লিঙ্ক প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইট স্পষ্ট ভাবে ব্যক্তিটির নাম এবং তিনি যে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত তা বলা হয়েছে। ১০ কোটি সরকারি অনুদানও অনুমোদনের কথা জানানো হয়েছে। ওয়েবসাইটটি হ্যাক হয়ে থাকলে দয়া করে সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানান।’
২০২১ সালে হিমন্তের স্ত্রী রিণিকি এবং তাঁদের পুত্র নন্দিলের নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে ২৯ বিঘা সরকারি জমি দখলের অভিযোগ এনেছিল একটি সমীক্ষা সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যমের একাংশ। তাদের দাবি, রিনিকির সংস্থা প্রথমে বেআইনিভাবে প্রচুর কৃষিজমি কেনেন। তারপর সেটাকে রাতারাতি শিল্পোদ্যোগী জমি হিসেবে চিহ্নিত করে ফেলেছেন। কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সেখানে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্পদ যোজনা থেকে ১০ কোটি টাকার সরকারি সাহায্যের আবেদন করে টাকা পেয়ে যায় রিণিকির সংস্থা ‘প্রাইড ইস্ট এন্টারটেনমেন্ট’। গোটা প্রক্রিয়া মাত্র ১০ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয়।
যদিও অভিযোগ খারিজ করে দেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তাঁর পাল্টা দাবি, আমার স্ত্রী যে কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত , সেই সংস্থার কেউই সরকারের কাছ থেকে কোনও আর্থিক সাহায্য নেননি।
বেশ কিছু সংবাদ এবং বিনোদন চ্যানেল, চা বাগান, হোটেল, রিসর্ট, স্কুল, সংবাদপত্র-সহ বহু ব্যবসায় জড়িত রিণিকির মালিকানাধীন ওই প্রতিষ্ঠান। কিন্তু নিয়ম হল, সিলিং আইনানুযায়ী কেউ ৪৯.৫ বিঘার বেশি কৃষিজমির মালিক হতে পারেন না।
কংগ্রেস, তৃণমূল, অসম জাতীয় পরিষদের মতো বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবার প্রভাব খাটিয়ে কৃষি জমির চরিত্র বদলে দিচ্ছে, কেন্দ্রের সাহায্য আদায় করছে। কৃষকদের জমি গায়ের জোরে দখল করছে। বিভিন্ন প্রমাণ তুলে ধরে হিমন্ত এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে কোভিডের সময়ে স্যানিটাইজ়ার এবং পিপিই কিট কেনা নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগও এনেছিল ‘ক্রসকারেন্ট’। যদিও প্রতি বারেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হিমন্ত।