পার্কিং ফি নিয়ে ফের বিতর্ক, কলকাতার পর বিতর্ক নিউ টাউন নিয়ে

কলকাতা , ২৯ জুন  – ফের বিতর্ক পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এলাকা। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে না জানিয়ে কলকাতার পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আচমকা এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অসন্তুষ্ট হন  মমতা। এরপর পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করে কলকাতা পুরসভা। ঠিক একই ঘটনা ঘটল নিউটাউনের ক্ষেত্রেও। সেখানেও পার্কিং ফি বাড়িয়েও, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল এনকেডিএ! কলকাতার বির্তকের ক্ষেত্রেও সূত্রপাত হয়েছিল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সাংবাদিক বৈঠককে ঘিরে। আর এনকেডিএ নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে, তাঁরই একটি টুইটকে কেন্দ্র করে। এ ক্ষেত্রে তিনি লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে না জানিয়ে ট্রাফিক ফাইনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছিল,  যা বাতিল করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নিজের টুইটারে কুণাল লেখেন, ‘‘নিউ টাউন বাজারে ট্রাফিক ফাইন ৫০০ টাকা যেটি এনকেডিএ চালু করেছিল, তা আপত্তিকর, বিভ্রান্তিকর ও জনবিরোধী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটি জানতেন না। মানুষের হয়রানির কথা জানতে পেরে তাঁর নির্দেশে এই ফাইনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও বাতিল করা হচ্ছে।’’ 

এই বিষয়ে এনকেডিএ কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। তবে এনকেডিএ-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, আর্থিক জরিমানা করার কোনও ক্ষমতা তাঁদের হাতে নেই। এ ক্ষেত্রে যে ‘ফাইন’ বা জরিমানার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা এনকেডিএ থেকে নেওয়া হয়নি। যে হেতু ‘ফাইন’ বা জরিমানার সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন,  তাই এ ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে তাঁরা কোনও প্রতিক্রিয়া জানাবেন না।


প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল থেকে বর্ধিত পার্কিং ফি চালু করার কথা ঘোষণা করে কলকাতা পুরসভা। নতুন হারে প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি করা হয় পার্কিংয়ের খরচ। বর্ধিত হারে পার্কিং ফি আদায় শুরুও হয়ে যায় । পুরসভার তরফে ওই পদক্ষেপের পর প্রকাশ্যে সে বার আপত্তি তোলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল। তিনি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীর ওই ফি বৃদ্ধিতে কোনও অনুমোদন নেই। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে ওই পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা কার্যকর করা হয়েছে। কুণাল  বলে দেন যে, ওই দিনই কলকাতা পুরসভা ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেবে। কু‌ণালের বক্তব্য জানার পর মেয়র ফিরহাদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে বললেই ভাল হত। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে না-বললেই ভাল হত। মেয়র এমনও বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে নির্দেশ দিলে তিনি বর্ধিত ফি প্রত্যাহার করে নেবেন। অতঃপর মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন মেয়রের সঙ্গে। মেয়র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেন। তার পর ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও তড়িঘড়ি বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তি জারি করেন পুর কমিশনার। তবে মেয়রের দফতর আবারও নতুন করে পার্কিং ফি বৃদ্ধির বিষয়ে ফাইল তৈরি করে তা নবান্নে পাঠিয়েছে । এ বার মুখ্যমন্ত্রী সম্মতি দিলে বাড়ানো হবে শহরের পার্কিং ফি।

উল্লেখ্য, কলকাতার পার্কিং ফি বিতর্কের সময় কুণালের সঙ্গে সংঘাত হয়েছিল মেয়র ফিরহাদের। এ ক্ষেত্রে তাঁর দফতর পুর ও নগরোন্নয়নের অধীনেই রয়েছে এনকেডিএ। কিন্তু এই বিতর্কে এখনও পর্যন্ত তাঁর কোন প্রতিক্রিয়া মেলে নি।