কলকাতা:- আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, গরম জল ও গুড় একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য একটি চমৎকার প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। মকর সংক্রান্তিতে বাঙালির ঘরে ঘরে নলেন গুড়ের সঙ্গে ভাপা পিঠে বা গুড়ের পায়েস অথবা দুধ পিঠে তৈরি হয়েছে। রান্নাঘরে গুড়ের মজুত সব বাড়িতেই থাকে। চিকিত্সাশাস্ত্রে গুড় খাওয়া অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে গুড়ের ব্যবহার বহুল পরিচিত। শুধু পিঠে খাওয়ার জন্যই গুড়ের ব্যবহার করা হয় তাই নয়, গুড় দিয়ে চা,মিষ্টি, ক্ষীর ও রুটির সঙ্গেও খাওয়া হয়। এতে রয়েছে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ফসফরাস ও কপার। এছাড়া এতে রয়েছে বেশি মাত্রায় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থও। যা প্রাকৃতিকভাবেই শরীরের জন্য উপকারী। বাইরে মারাত্মক দূষণ থেকে বাঁচতে খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন গুড়। প্রাকৃতিক পাচক এনজাইম বাড়ায়, হজমশক্তিকে আরও উন্নত করতে ও কিডনির যে কোনও সমস্যার সমাধান হিসেবে এই পানীয়ের কোনও বিকল্প নেই। আয়ুর্বেদবিদদের মতে, প্রতিদিন সকালে খালি পেটে গুড়ে জল খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আইসড চা ও লেমনেডের একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়ের বিকল্প হিসেবে প্রতিদিন খেতে পারেন। তাহলে জেনে নিন এর উপকারিতাগুলি।
১)ওজন কমাতে-
শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি কমাতে গুড়ের জল খুবই উপকারী। প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর থেকে মেদ গলিয়ে ফেলতে রোজ খালি পেটে গুড়ে জল খেতে পারেন। গুড়ের মধ্যে উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ও মিনারেলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। মেটাবলিজম বাড়ায় ও চর্বি কমায়।
২)শরীরকে ডিটক্স করে-
শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে গুড়ের জল অত্যন্ত উপকারী। গুড়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ফাইবার, যা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে সহজে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এমনকি এটি শ্বাসযন্ত্র, ফুসফুস, খাদ্যনালী, পাকস্থলী ও অন্ত্র পরিষ্কার ও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৩)রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে-
সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে গুড়ের জল। আসলে, গুড় হল ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি১, বি৬ এবং সি-য়ের ভালো উৎস। পাশাপাশি, গুড়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
৪)ঠান্ডা লাগার প্রবণতা থাকলে-
গুড়ের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উপকারিতা সর্দি, কাশি এবং সাধারণ ফ্লুর লক্ষণগুলিকে ধীরে ধীরে উপশপ করার চেষ্টা করে। এতে রয়েছে বেশ কয়েকটি ফেনোলিক যৌগ, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, শরীরকে শিথিল করে ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যেঙ্গের কাজগুলি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।