কাস্ট সেন্সাস-৫ রাজ্যের ভোট নিয়ে জরুরি বৈঠকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি

দিল্লি, ৯ অক্টোবর– সোমবার পাঁচ রাজ্যে ভোটের নির্ঘন্ট  ঘোষণা করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর এর পরই দেশের বড় দলগুলিতে শুরু হয়ে গেল তাদের জুড়োহুড়ি। এদিন দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হয়েছেন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সোনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি-সহ বাকি সদস্যরা। এই বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে বলেই খবর। বিহারের কাস্ট সেন্সাসের ফল প্রকাশের পর থেকেই দেশ জুড়ে জাতি সমীক্ষা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। কংগ্রেস প্রথম থেকেই এই দাবি সমর্থন করে আসছে। ওয়ার্কিং কমিটি পাঁচ রাজ্যের ভোটে জাতিসমীক্ষার বিষয়টিকে কীভাবে তুলে ধরবে সে ব্যাপারে আলোচনা প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বৈঠকে। লোকসভা ভোট এবং ইন্ডিয়া জোটে এই প্রশ্নে দলের অবস্থানও স্পষ্ট করা হতে পারে সোমবারের বৈঠকে।
পাঁচ রাজ্যের ভোটের নির্ঘণ্ট সোমবার দুপুরেই ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে পাঁচ রাজ্যের ভোটের কৌশল নিয়ে কথা হবে। রাজস্থান, ছত্তীসগড় এবং মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ছাড়াও আম আদমি পার্টির সঙ্গে লড়াই করতে হবে দলকে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল তিন রাজ্যেই দলের প্রার্থী তালিকা আংশিক ঘোষণা করে দিয়েছেন। বৈঠকে কথা হবে আপের সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়া নিয়ে।
অতীতে কংগ্রেস জাতের রাজনীতির তীব্র বিরোধিতা করেছে। বিশ্বনাথপ্রতাপ সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ওবিসি কোটা চালু করেন। কেন্দ্রীয় সরকারে চাকরি ও শিক্ষায় ২৭ শতাংশ পদ/আসন ওবিসি’দের জন্য সংরক্ষণ করেন। রাজীব গান্ধি তখন কংগ্রেস সভাপতি এবং দেশের বিরোধী দলনেতা। তিনি দলকে বিশ্বনাথপ্রতাপের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বলেন। ওবিসি কোটার বিরোধিতা করে কংগ্রেস।
তবে কাস্ট সেন্সাস নিয়ে দলকে অনেক বেশি ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে। দলের উদয়পুর কনক্লেভ এবং গত মাসে হায়দরাবাদে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে কাস্ট সেন্সাস করাবে। রাহুল গান্ধি স্লোগান তুলেছেন, ‘জিতনি আবাদি উতনা হক।’ এই স্লোগান নিয়ে রাহুলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি । তাতে কংগ্রেস খুশি। কিন্তু কংগ্রেসের সমস্যা ভিন্ন। দলের অন্দরেই এই নিয়ে প্রশ্ন, সংশয় আছে। দলের আইনজীবী সাংসদ অভিষেক মণু সিংভি প্রকাশ্যেই এই নীতির সমালোচনা করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। কাস্ট সেন্সাস প্রশ্নে দলে আরও অনেকের প্রশ্ন আছে।
তার আগে ইন্দিরা গান্ধিও ওবিসি সংরক্ষণ চাননি। তাঁর কথা ছিল, ‘না জাত পর, না পাত পর রাজনীতি করনি হ্যায়।’ সেই ইন্দিরা-রাজীবের পরিবারের সদস্য সনিয়া, রাহুলরাই জাতিসমীক্ষা নিয়ে এখন সবচেয়ে সরব। রাহুল গান্ধি মনে করছেন, এই পথে চলে এখন উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের সহজে সখ্য হতে পারে। আর ক্রমে কংগ্রেস তার এসসি, এসটি এবং ওবিসি ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে পারে।