ভোপাল, ২৭ আগস্ট – এক দলিত যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। বাধা দিতে গেলে যুবকের মা’কে বিবস্ত্র করে হেনস্থার অভিযোগও উঠেছে ওই দুষ্কৃতী দলের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলায় এই ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, মৃত যুবকের বোন যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য বেশ কয়েকবার ওই দলিত যুবককে চাপ দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এই খুনের ঘটনায় নয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বছর চারেক আগে বাড়ি ফেরার পথে যৌন হেনস্থার শিকার হন দলিত মৃত যুবক নীতিনের বোন । থানায় গিয়ে অভিযোগও জানিয়েছিলেন তিনি । যদিও সেই মামলায় কোন সুরাহা হয়নি। এদিকে অভিযুক্তদের পরিবারকে বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছিল অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। অভিযোগ প্রত্যাহার না করাতেই নির্যাতিতার দাদা ও মাকে মারধর করা হয়। প্রচন্ড মারধরে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। শনিবার ঘটনাটি ঘটে মধ্য প্রদেশের সাগর জেলায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগর জেলার বারোদিয়া নৌনাগির গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। দলিত যুবকের মৃত্যু হয়েছে তার নাম নীতিন আহিরওয়ার। নিহত যুবকের বোন ২০১৯ সালে বিক্রম সিং নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেন। এরপর থেকেই ওই যুবক ও তাঁর পরিবার চাপ দিচ্ছিল অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য। গত কয়েকদিন ধরে সেই চাপ আরও বেড়ে গিয়েছিল। তারপরেই বৃহস্পতিবার নীতীনের বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। নীতীনকে বেধড়ক মারধর করা হয় । দুষ্কৃতীদের হাত থেকে ছেলেকে রক্ষা করতে ছুটে যান নীতীনের মা। তখন নীতীনের মায়ের কাপড় ছিঁড়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। বিবস্ত্র করে হেনস্তা করা হয় নীতীনের মা’কে। থামাতে গেলে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় নীতীনের ১৮ বছর বয়সের বোনকে। এছাড়াও তাঁদের বাড়িতেও যথেচ্ছ ভাঙচুর চালায় অভিযুক্তরা। বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডব চালানোর পর পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপরই পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন নীতীনের বোন।
পরে নির্যাতিতার দাদা তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন এবং বুন্দেলখণ্ড মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান। সেখানে যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বৃদ্ধার চিকিৎসা চলছে বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধার একটি হাত ভেঙে গিয়েছে, শরীরের একাধিক জায়গায় চোট রয়েছে। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
নির্যাতিতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুন, যৌন হেনস্থা ও ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করা ও জনজাতি-উপজাতি আইনের একাধিক ধারায় নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত কোমল সিং এখনও পলাতক। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। বেশ কয়েকটি অবিজেপি দলও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগেই বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে এক দলিত ব্যক্তির মুখে এক বিজেপি নেতা প্রস্রাব করছেন এমন ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই মধ্যপ্রদেশেই ফের দলিত নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে এল।