৩০ দিনের বেশি ছুটি জমলেই টাকা দিতে বাধ্য সংস্থা বলছে নয়া শ্রম আইন

দিল্লি, ৬ সেপ্টেম্বর– বিপুল বদলের পথে শ্রম আইন। যে নতুন ৪ শ্রম আইন আসতে চলেছে তাতে পরিবর্তন ঘটবে দেশের কর্মদাতা এবং কর্মচারী উভয়ের জীবনেই। যে সমস্ত নতুন বদল ঘটতে চলেছে তার মধ্যে একটি হল, এক বছরে কর্মচারীরা সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত সবেতন ছুটি জমা করতে পারবেন। কিন্তু যদি পাওনা ছুটির সংখ্যা ৩০ দিন ছাড়িয়ে যায়, তাহলে সেই অতিরিক্ত ছুটির জন্য কর্মীকে টাকা দিতে বাধ্য সংস্থা।

২০২০ সালের কাজের সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কাজের অবস্থা সংক্রান্ত বিধি আইনের ৩২ নম্বর ধারায় বার্ষিক ছুটি সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কর্মীরা এক বছরে সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত বার্ষিক ছুটি জমা করতে পারবেন। যদি বছরের শেষে জমে যাওয়া ছুটির সংখ্যা যদি ৩০ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে কর্মীরা সেই ছুটি পরের বছরের জন্য এগিয়ে নিয়ে যেতে বা জমা করতে পারবেন। নয়তো সেই ছুটির বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে টাকা দিতে বাধ্য থাকবে সংস্থা ।

এই ৪টি শ্রম আইনে ‘কাজের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং কাজের অবস্থার নিয়ম’ অনুযায়ী, সংস্থায় যাঁরা ম্যানেজার কিংবা সুপারভাইজার পদ ছাড়া অন্যান্য পদে চাকরি করেন, তাঁদেরই ‘কর্মচারী’ বলা হচ্ছে।  কারণ নতুন শ্রম আইনে  ম্যানেজার কিংবা সুপারভাইজার পদে কর্মরত ব্যক্তিদের ‘শ্রমিক’ বলে গণ্য করা হচ্ছে না।


ভারত সরকার খুব জলদিই চারটি শ্রম আইন চালু করতে চলেছে দেশ জুড়ে। কাজের সুরক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কাজের অবস্থার বিধি, যার মধ্যে রয়েছে মজুরির বিধি, শিল্প সম্পর্কিত বিধি এবং সামাজিক সুরক্ষাবিধি- এই সবকটিই সংসদে পাস করিয়ে নেওয়া হয়েছে। যদিও কবে থেকে এই আইন কার্যকর হতে চলেছে সেই তারিখ এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন এই নিয়মের ফলে একটি নির্দিষ্ট সীমার পর সংস্থার তরফে কর্মীদের উপার্জিত ছুটি কেটে নেওয়ার প্রথা বন্ধ হবে। যেহেতু ৩০ দিনের বেশি ছুটি জমে গেলে সংস্থাকে তার বিনিময়ে টাকা দিতে হবে, তাই সেই টাকা দেওয়া এড়িয়ে যেতে সংস্থার তরফেও কর্মীদের জমানো ছুটি নিয়ে নিতে উৎসাহ দেওয়া হবে বলে আশাবাদী তাঁরা।

তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, বর্তমানে বহু সংস্থাই কর্মীদের ছুটি নিতে দেন না, আবার জমে যাওয়া ছুটির বদলে টাকাও দেওয়া হয় না তাঁদের। আবার সেই ছুটি যে পরবর্তী বছরে গিয়ে জমা হয়, তাও নয়। ফলে খাতায়-কলমে সবেতন ছুটি থাকলেও তা নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিতই রয়ে যান কর্মীরা। সেই বঞ্চনা থেকে কর্মচারীদের মুক্তি দিতে নতুন আইন কার্যকর হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।