বেজিং, ৩১ অক্টোবর-– ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বের মানচিত্র থেকে ইজরায়েলের নাম মুছে দিল চিন৷ চিন সরকারের পক্ষ থেকে কোনও নতুন মানচিত্র প্রকাশ করা হয়নি৷ তবে, চিনা প্রযুক্তি সংস্থা বাইদু এবং আলিবাবার সাম্প্রতিক অনলাইন মানচিত্রে আর ইজরায়েলের নাম নেই৷ দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইদুর চিনা ভাষার অনলাইন মানচিত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের সীমানা চিহ্নিত করা আছে৷ ইজরায়েলি শহরগুলিও রয়েছে৷ কিন্ত্ত, ইজরায়েল দেশটির নাম নেই৷ যদিও প্রতিবেশী অন্যান্য সবকটি দেশেরই স্পষ্ট নাম রয়েছে মানচিত্রটিতে৷ একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে আলিবাবার অনলাইন মানচিত্রেও৷ এমনকি, লুক্সেমবার্গের মতো ছোট দেশের নামও লেখা রয়েছে, কিন্ত্ত ইজরায়েলের নাম নেই৷
দুই চিনা সংস্থার প্রকাশিত মানচিত্র হলেও, তাদের এই পদক্ষেপে চিন সরকারের যে সমর্থন রয়েছে তা বলাই বাহুল্য৷ কারণ, অতীতে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, বেজিং-এর নির্দিষ্ট করা মানচিত্রের বাইরে একচুলও এদিক ওদিক করা হলে, সেই মানচিত্রের প্রকাশক সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে চিন সরকারকে৷ এই ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সেই ধরনের কোনও বার্তা আসেনি সরকারের পক্ষ থেকে৷ ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামাসের হামলার পর, প্রায় প্রতিটি দেশই হামাস গোষ্ঠীর সন্ত্রাসবাদী হামলার সমালোচনা করেছে৷ চিনের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া হয়নি৷ বরং, হামাসের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান না নেওয়ার জন্য চিনের সমালোচনা করেছে ইজরায়েল৷ উল্টোদিকে, চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই গাজায় ইজরায়েলের পাল্টা হামলার সমালোচনা করে বলেছেন, ‘তাদের পদক্ষেপগুলিকে আর আত্মরক্ষা বলা চলে না৷’
বস্তুত, নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চিনে, অন্তত সোশ্যাল মিডিয়ায় ইহুদি বিদ্বেষ ক্রমে বাড়ছে৷ চিনা সরকারি সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে সম্প্রতি, মার্কিন সম্পদের এক অসম পরিমাণে কীভাবে ইহুদিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, সেই বিষয়ে এক অনলাইন আলোচনা হয়েছে৷ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চিন সরকার যদি এই ইহুদি বিদ্বেষ বিপজ্জনক এবং সমস্যার বলে মনে করত, তাহলে অনলাইনে ইহুদি-বিরোধী মন্তব্য-আলোচনাগুলি চলার অনুমতিই দেওয়া হত না৷ সরকার সেগিলি সেন্সর করত৷ স্পষ্টতই, ইহুদি বিরোধিতা সহ্য করা হবে বলে বার্তা দিচ্ছে চিন সরকার৷
চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রকাশ্যেই প্যালেস্তাইনের পক্ষে তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেছেন৷ সৌদি আরবে রিয়াধ-গালফ-চিন শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, “প্যালিস্তিনীয়রা ঐতিহাসিকবাবে যে অবিচার সহ্য করেছে, তাকে আরও এগিয়ে যেতে দেওয়া যায় না৷” তবে, তাঁর এই প্যালেস্তাইন-প্রীতি কতটা সত্যি সত্যি প্যালেস্তিনীয়দের পক্ষে সমর্থন, আর কতটা আরব দুনিয়ায় চিনের প্রভাব কায়েম করার লক্ষ্যে, সেই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷