দিল্লি, ৩ নভেম্বর – বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে অত্যন্ত বিরক্তিপ্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সানি দেওলের বিখ্যাত সংলাপ বললেন। । দেশের আদালত গুলির দীর্ঘসূত্রী যে ‘তারিখ পে তারিখে’ পরিণত হয়ে যাচ্ছে, তা একপ্রকার স্বীকার করে নিলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, এই ঢিলেমিতে বিচারব্যবস্থার আসল উদ্দেশ্যটাই মাটি হয়ে যাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি শুক্রবার বললেন, “আমরা চাই না আমাদের আদালতগুলো ‘তারিখ পে তারিখ’ আদালত হয়ে থেকে যাক। এতে বিচারব্যবস্থার দ্রুত বিচার পাইয়ে দেওয়ার যে উদ্দেশ্য, তা সফল হবে না।” প্রধান বিচারপতির ক্ষোভ, শুধু শুক্রবারই আইনজীবীদের কাছ থেকে ১৭৮টি মামলা মুলতুবির আবেদন এসেছে।
এদিন তথ্য তুলে ধরে বিচারব্যবস্থার ঢিলেমি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, “শুধু সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসেই ৩ হাজার ৬৮৮টি মামলার মূলতুবি চেয়েছেন আইনজীবীরা। অক্টোবর থেকে বিভিন্ন দিনে গড়ে ১৫০টির বেশি মামলা মুলতবি রাখার স্লিপ জমা পড়েছে আমাদের কাছে।কখনও আইনজীবীর অনুপস্থিতি, কখনও ইচ্ছাকৃত মামলাকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টার জেরে দিনের পর দিন মামলা মুলতুবি হচ্ছে।এর ফলে মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ হচ্ছে।” তিনি বলেন, এতে আদালতের উপর নাগরিকরা আস্থাকে হারাবেন। দেশে আমাদের আদালতের খারাপ ভাবমূর্তি তৈরি হবে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বজায় রাখাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা এ দেশে নতুন কিছু নয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি মামলা ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন আদালতে। শুধু হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেই প্রায় ৩০ শতাংশ বিচারপতির আসন শূন্য। স্বাভাবিকভাবেই বিলম্বিত হচ্ছে বিচারপ্রক্রিয়া। আর তাতেই অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি।
তবে, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এবং সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডভোকেটস-অন-রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশনের তৎপরতায়, মামলা দায়ের এবং শুনানির জন্য তালিকাভুক্তির সময় অনেকটাই কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেছেন, “আমি দেখেছি ফাইলিং থেকে তালিকাভূক্তির সময় অনেকটাই কমেছে। আমরা সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এবং সুপ্রিম কোর্ট অ্যাডভোকেটস-অন-রেকর্ড অ্যাসোসিয়েশনকে ছাড়া এটা সম্ভব হত না।”