ফের আতুড়ঘর চিন, ভারতে ঢুকে পড়তে পারে ‘রহস্যময়’ নিউমোনিয়া, একাধিক রাজ্যে সতর্কতা জারি কেন্দ্রের

দিল্লি, ২৯ নভেম্বর– শত রোগের আতুড়ঘর চিনে ফের নতুন রোগের থাবা৷ তাও একেবারে আতঙ্কের পর্যায়ে৷ ইতিমধ্যেই বিশ্ব কাঁপিয়েছে করোনা৷ যার উৎপত্তিস্থল হিসেবে চিনকেই চিহ্নিত করেছিল বিশ্বের বহু দেশ৷ সেই করোনোর আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই ফের সেই চিনেই দেখা দিয়েছে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’৷ যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ কয়েকদিন আগেই সতর্ক করে নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্র৷ কেন্দ্রের সেই নির্দেশিকা পাওয়ার পরই এবার নডে়চডে় বসল ছয় রাজ্যও৷
সতর্কতার নির্দেশ পাওয়া মাত্র স্বাস্থ্য পরিষেবা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে রাজস্থান, কর্নাটক, গুজরাত, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা এবং তামিলনাড়ু সরকার৷ এই ছয়টি রাজ্যের মেডিক্যাল টিমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা যেন শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত থাকে৷ রোগী ভর্তি হলে চিকিৎসার কী ব্যবস্থা রয়েছে, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাতে বলা হয়েছে৷
রবিবারই কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছিল৷ চিনে যে ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’ ছডি়য়ে পডে়ছে, তার কোনও লক্ষণ ভারতে দেখা গেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, রাজ্যগুলিকে অবিলম্বে হাসপাতালের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে৷ ওই নিউমোনিয়ার কোনও লক্ষণ দেখা তার মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে৷ কোনওভাবেই যাতে রোগটি ছডি়য়ে  পড়তে না পারে তা নিয়ে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে৷ যদিও এখনই এবিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক৷
এই পরিস্থিতিতে কর্নাটকের স্বাস্থ্য দফতর সে রাজ্যের নাগরিকদের মরশুমি  ফ্লুয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে৷ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এটি একটি সংক্রামক রোগ৷ যা পাঁচ থেকে সাত দিন স্থায়ী হয় এবং যার জেরে অনেকের মৃতু্যও হতে পারে৷ তাই এই রোগের উপসর্গ কী, রোগীর কী করা উচিত এবং উচিত নয়, তা জানিয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে৷ যেখানে বলা হয়েছে, হাঁচি, কাশির সময় নাক, মুখ চাপা দিতে হবে৷ অবশ্যই বার বার হাত ধুতে হবে৷ ভিড়ের জায়গায় মাস্ক পরতে হবে৷ কোনওভাবেই মুখে হাত দেওয়া চলবে না৷
তবে রাজস্থানের সরকার একে ততটা উদ্বেগজনকের তকমা দিতে রাজি নয়৷  স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত প্রধান সচিব শুভ্রা সিং জানান, ‘পরিস্থিতি এখন উদ্বেগজনক’ নয়৷ তবে স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রতিটি এলাকায় নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ হাসপাতালে শিশু বিভাগ এবং মেডিসিন বিভাগকেও প্রস্তুত থাকার কথা বলেছে সে রাজ্যের সরকার৷
যেহেতু এই রোগটি শিশুদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে তাই শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরাখণ্ড সরকার৷ যদি শিশুদের নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে৷ অন্যদিকে,  হাসপাতালগুলিকে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে গুজরাত সরকারও৷ তামিলনাডুতেও চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, যদিও এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক৷