মুম্বই, ১১ অক্টোবর– ২৩ বছর আগের একটি অভিযোগ নিয়ে লেখিকা তথা সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে মামলায় সায় দিয়েছেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল বিকে সাক্সেনা৷ জগৎবিখ্যাত এই লেখিকা ও মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে জঙ্গি দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ৷ শিক্ষক শেখ সওকত হোসেনের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে একই ধারায়৷
গত সপ্তাহেই সংবাদ পোর্টাল নিউজক্লিকের সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সংস্থার হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে রাজধানীর পুলিশ৷ তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে৷ আদালতে দিল্লি পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে চিনের থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে দেশ বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছে৷ সাতদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মঙ্গলবার তাদের দশদিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজত বা জেলে পাঠিয়েছে আদালত৷ প্রবীর ও অমিত আইনজীবী মারফৎ গোটা অভিযোগকেই সাজানো বলে দাবি করেছেন৷
লেখিকার বিরুদ্ধে অভিযোগটি দায়ের হয়েছিল ২০১০-এ৷ দিল্লিতে একটি সেমিনারে অরুন্ধতী এবং হোসেন কাশ্মীরের ভারতভুক্তি নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন এবং দেশের অখণ্ডতা বিনষ্টে উসকানি দেন বলে শ্রীনগরের বাসিন্দা এক বিজেপি সমর্থক দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন৷ দিল্লির তৎকালীন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সরকার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করার অমুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশকে৷ পরবর্তীকালে আম আদমি পার্টির সরকারও অনুমতি দিতে অস্বীকার করে৷ প্রশ্ন উঠেছে তাহলে দিল্লির উপ-রাজ্যপাল কার সুপারিশের ভিত্তিতে মামলায় সায় দিলেন৷ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার অবস্থান বদলে মামলায় সায় দিয়েছে নাকি উপ-রাজ্যপাল নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট হয়নি৷ প্রতিক্রিয়া মেলেনি অরুন্ধতী এবং হোসেনের৷
২০১০-এ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম৷ দিল্লি পুলিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে কাজ করে৷ তিনি তখন বলেছিলেন, কাশ্মীর নিয়ে লেখিকা এমন কিছু বলেননি যা দেশ বিরোধী বলে দেগে দেওয়া যেতে পারে৷ পুলিশকে সংযত হতে হবে৷ এখন সেই অভিযোগে মামলা দায়ের হওযায় দিল্লির উপ-রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন চিদম্বরম৷ সুশীল পণ্ডিত নামে অভিযোগকারী কাশ্মীরি পণ্ডিত পুলিশের কাছে নালিশ ঠুকেছিলেন, অরুন্ধতী এবং সওকত হোসেন কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার উসকানি দিয়েছেন৷ সেমিনারে অনেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা উপস্থিত ছিলেন৷