এবারের নির্বাচন শুধুমাত্র ক্ষমতায়নের নির্বাচন নয়। সমগ্র জাতি কোন দিকে চলবে, দেশের অখণ্ডতা, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করা সবকিছুই রয়েছে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নতুন ভারত গড়তে এবং নতুন প্রজন্মকে যে আশার আলাে দেখিয়েছিল, তা পূরণ করেনি। শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ নামে একটি অনুষ্ঠানে যােগ দিয়ে একথা বলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, মানুষের জন্য লড়াই করে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমাে তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিহীন ভারতীয় রাজনীতি ভাবাই যায় না। তৃণমূল শুধুমাত্র ক্ষমতায়নের জন্য রাজনীতি করে না। আর মরশুমের ফুলের মতাে নয় যে, স্বল্প সময়ের জন্য দেখা যায়। দলনেত্রী তথা তৃণমুল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতাে সবসময় মানুষের পাশ থাকে। যখন মানুষ বিপন্ন, দেশ বিপন্ন হয় সবচেয়ে আগে যিনি পথে নামেন কথা বলেন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে পার্থবাবু বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে নই কিন্তু বাংলার যে পুলিশ বা বাহিনী আছে তারা নন কেন? এটাই প্রশ্ন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভােটারদের থেকে আধা সেনাবাহিনী বেশি ছিল সেখানে মানুষের আশীর্বাদ পেয়ে ২১১টি আসনে জয়ী হয়েছি। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হােক। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে যে পর্যবেক্ষক নিয়ােগ করছেন তারা অবসরপ্রাপ্ত। অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের নির্বাচনের কাজে না নেওয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু তারাই আবার অবসরপ্রাপ্তদের নিয়ােগ করছেন।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক, সূর্যকান্ত মিশ্র বিজেপি এবং তৃণমূলের যে আঁতাতের অভিযােগ তুলেছেন এর উত্তরে পার্থবাবু বলেন, তারা এতকিছু জানেন, শুধুমাত্র নির্বাচনী জয়ী হওয়ার জন্যে এই কথাগুলি মানুষকে বােঝাতে পারেন না। সুর্য ডুবে গেছে তাই এ সমস্ত কিছু বলে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন তারা। সিপিএম ছেড়ে দলে দলে লােক বিজেপিতে যােগ দিচ্ছে। আগে তা ঠেকানাের কথাও বলেন তৃণমূল মহাসচিব।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ, রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই প্রশ্নের উত্তরে পরিসংখ্যান দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের কথাও তুলে ধরেন এদিন। বাংলায় থেকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা ভুলে যাব এতাে সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে কটাক্ষ করে পার্থবাবু বলেন, ৫ বছরে ৯২টি দেশে ঘুরেছেন। আর নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রচার করছেন বাংলায়। চাওয়ালার সম্পত্তি যে আড়াই কোটি টাকার বেশি হতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন তােলেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মােদিকে যে পােশাক দিয়েছেন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতি আর সৌজন্য আলাদা বিষয়। রাজনীতি করতে গিয়ে যেন সৌজন্য হারিয়ে না যায় এ বিষয়ে খেয়াল রাখার কথা বলেন। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক বাংলাকে যে বিহারের সঙ্গে তুলনা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এরা উড়ে এসে জুড়ে বসে এ সমস্ত কথা বলছেন। এটা বাংলার অপমান। এদিন সব প্রশ্নের উত্তর দিলেও মুকুল রায়ের প্রসঙ্গে কোনও উত্তর দিতে চাননি তিনি।