যদিও এই বিবৃতি খারিজ করেছে ভারত। কানাডায় কোনও হিংসার ঘটনায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিটি বলে জানায় ভারত। বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয় “আমরা তাদের সংসদে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেখেছি এবং প্রত্যাখ্যান করেছি। কানাডায় যে কোনও হিংসায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ অযৌক্তিক । একই ধরনের অভিযোগ কানাডার প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে করেছিলেন এবং তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল”।
উত্তাপের আভাস পাওয়া গিয়েছিল জি ২০ সম্মেলনের মধ্যেই। ভারত এবং কানাডার সরকারের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা বোঝা যায় তখনই। জি-২০ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খালিস্তানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠকে জাস্টিন ট্রুডো এক পা এগিয়ে আবার বিষয়টি ‘বাক স্বাধীনতার’ সঙ্গে তুলনা করেন। জাস্টিন ট্রুডোর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া বিবৃতি দেয় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। এর পরেই ভারতের সঙ্গে ট্রেড মিশন বাতিল করেন কানাডা সরকার।
এই প্রেক্ষাপটে দিল্লিতে অবস্থিত কানাডার দূতাবাসের নিরাপত্তা বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, কানাডার দূতাবাসের নিরাপত্তায় সিআরপিএফ ও দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দূতাবাসের নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না প্রশাসন।
ভারতের সিদ্ধান্তের কী জবাব দেয় কানাডা এখন সেটাই দেখার। এই অভিযোগে বেজায় ক্ষুব্ধ ভারত। কূটনৈতিক ভাষাতেই জবাব দিয়েছে নয়া দিল্লি। নরেন্দ্র মোদি সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র অরিন্দম বাগচির কথায়, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি খলিস্তানিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এমন অযৌক্তিক কথা বলছেন।
কানাডায় খালিস্তানিরা দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। পাঞ্জাবকে স্বাধীন দেশ বা রাষ্ট্র ঘোষণার দাবিতে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে তারা ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কানাডা হল তাদের আসল ঘাঁটি। ভারতের পর ওই দেশেই শিখরা সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় বাস করেন। হালে খালিস্তানিদের আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েছে। ভারতীয় দূতাবাসে হামলা, জাতীয় পতাকা পোড়ানো, কানাডা প্রবাসী ভারতীয়দের উপর হামলার একাধিক ঘটনা ঘটে।
জাস্টিন ট্রুডো দেশে ফিরেই ভারত-কানাডা প্রস্তাবিত ট্রেড মিশন বাতিল করে দেন। আগামী মাসে কানাডা সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দিল্লিতে এই ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। দু-দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।