কলকাতা, ১৪ অক্টোবর– ফের ফাটল বৌবাজার এলাকায়। তার জেরে কাকভোরে ঘর ছাড়তে হল দুর্গা পিতুরি লেনের পাশের গলি মদন দত্ত লেনের বাসিন্দাদের। এই এলাকার প্রায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে দেখা গিয়েছে ফাটল। সেই ফাটল যে মেট্রো সম্প্রসারণের কাজের ফলেই তা স্বীকার করে নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তবে তাদের দাবি নির্ধারিত রুট ঘুরিয়ে দেওয়াতেই এই ফাটল।
আজ, শুক্রবার ভোরবেলার এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় এলাকায়। ইতিমধ্যেই পুলিশ পৌঁছেছে সেখানে, বাসিন্দাদের বলা হয়েছে ঘর ছেড়ে এলাকা খালি করে দিতে।
বৌবাজারে গত তিন বছর ধরে বারবারই ঘটছে এই কাণ্ড। সৌজন্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ। এদিন তাই সাতসকালে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকাবাসীরা। ঘটনাস্থলে মেট্রো আধিকারিকরাও এসে পৌঁছন। তাঁদের সামনে রাগে, ক্ষোভে রীতিমতো ফেটে পড়েন সকলে। তাঁদের এলাকায় ঢুকতে বাধাও দেওয়া হয়। পুলিশবাহিনী পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এর আগে মে মাসেই মেট্রোর কাজ চলাকালীন বৌবাজারে দুর্গা পিতুরি লেনের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছিল। ঘর ছেড়েছিলেন অনেক পরিবার। মাস চারেকের মাথায় ফের বিপদ। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে অভিযোগ তুলেছেন, আজ ভোররাতে ফাটল ধরেছে বাড়িতে, মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কারও দেখা পাওয়া যায়নি। পরে কয়েক জন আধিকারিক আসেন। ইঞ্জিনিয়ার পাঠানোই হয়নি এখনও ঘটনাস্থলে।
প্রথম আতঙ্কের স্মৃতি এখনও ভোলেনি বৌবাজার। ২০১৯ সালে ৩১ অগস্ট। গভীর রাতে যখন সকলে ঘুমোচ্ছেন, তখনইবৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন এবং সেকরাপাড়া লেনের একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছিল। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে এই বিপর্যয়। বিপজ্জনকভাবে ভেঙেচুরে যায় বহু বাড়ি। ঘরছাড়া হন এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা। এক কাপড়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে উঠতে হয় হোটেলে। তার পরে কেউ পেয়েছেন ক্ষতিপূরণ কেউ বা এখনও রয়েছেন মেট্রোর ঠিক করে দেওয়া ভাড়াবাড়িতে।
এর পরে চলতি বছরের ১১ মে আবারও একই কাণ্ড। আজ, ১৪ অক্টোবর ফের ফাটল। আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বৌবাজারের। ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন পেরিয়ে নিজের বাড়িতে পাকাপাকি শান্তি মিলবে কবে, সে প্রশ্নেরই উত্তর হাতড়াচ্ছেন সকলে।